ঈদের পর সরকারকে চাপে রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত বিএনপির, লক্ষ্য নির্বাচন
টুইট ডেস্ক : আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। পবিত্র ঈদুল আজহার পর বিভিন্ন ইস্যুতে এই চাপ আরও বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। তবে কোনো সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে বিএনপি।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার এবং ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে যে আন্দোলন চলছে, সেটি সরকারের ওপর চাপ তৈরির কৌশলেরই অংশ। এ দুটি ইস্যুতে আন্দোলন আরও জোরদার করতে মঙ্গলবার (২০ মে) বিকালে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা যৌথ সভা করেন। সভায় আগামীকাল বুধবার থেকে দুই কর্মসূচিতে জনসমাগম আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায়ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার হত্যার বিচার এবং আদালতের রায়ের পরেও ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ না পড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট পথনকশা ঘোষণা না করার বিষয়ে আলোচনার পর স্থায়ী কমিটির নেতারা দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। সভায় কয়েকজন সদস্য অভিমত প্রকাশ করেন যে সরকার নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করছে, তাতে নির্বাচন নিয়ে জনমনে নানা আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে।
গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সোমবার রাত সাড়ে আটটায় সভা শুরু হয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা চলে। সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।
কথা বলে জানা গেছে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর মাঠের চাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেও যাতে কোনো সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে বিএনপি। কারণ, সরকারকে বিপদে ফেলে নয়, বরং চাপে রেখে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা যথাসময়ে নির্বাচন আদায় করতে চান। ইতিমধ্যে পতিত আওয়ামী লীগের লোকজন হঠাৎ হঠাৎ রাজপথে মিছিল করছে, আবার নানা পক্ষ ইস্যু সৃষ্টি করে রাস্তায় নামছে। এর মধ্য দিয়ে তারা সরকারকে বিপদে ফেলতে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে বলে বিএনপির সন্দেহ।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ, বর্তমান সংবিধান বাতিল, গণভোট অনুষ্ঠান, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন- এ বিষয়গুলো সামনে এনে জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ (এনসিপি) কোনো কোনো পক্ষ নতুন করে বিতর্কের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে। সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে এমন কিছুর আশঙ্কা করছেন বিএনপির কোনো কোনো নেতা। বাস্তবে এ ধরনের কিছু হলে তখন সরকার কী ভূমিকা নেবে, পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেবে, সেটি নিয়ে চিন্তিত বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
এদিকে ব্যাংকক থেকে ঢাকার এক অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ধরনের আশঙ্কাই প্রকাশ করেছেন। তিনি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে ‘কালো ছায়া’ দেখছেন বলেও মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া, জনগণের ভোটের যে অধিকার, সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটা পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।’