রাজশাহীতে ছয় বাড়িতে হামলা ও লুটপাট
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের রক্ষিতপাড়া গ্রামে একটি বিল দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সমর্থক ছয়টি পরিবারের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আতঙ্কে ওই পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আছেন। হামলার শিকারদের মধ্যে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারও রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ১৬ মে সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বিএনপির উপজেলা শাখার সভাপতি সফিকুল ইসলাম শাফীর নেতৃত্বে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী এ হামলা চালায়। হামলাকারীরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছিল এবং বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের ছেলে মিজানুর রহমান বলেন,
“আমার বাবা প্রায় ৫০ বছর আগে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে খাসজমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করতেন। আমি তা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আওয়ামী লীগ সরকার বিদায়ের পর থেকেই শাফীর অনুসারীরা বিলটি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। ১৬ তারিখ সকালে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাই। এরপর তারা আমাদের ছয়টি বাড়িতে হামলা চালায়, ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়ির কাগজপত্র, স্বর্ণালঙ্কার, টাকা, আসবাবপত্র, এমনকি মোটরসাইকেল পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছে। এখন ভয়ে থানায়ও যেতে পারছি না।”
মিজানুর দাবি করেন, তারা সক্রিয় রাজনীতিতে নেই, তবে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং ভোটার।
অন্যদিকে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম শাফী বলেন, “রক্ষিতপাড়া বিল নিয়ে আগেই বিরোধ ছিল এবং মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। তারা আগে থেকেই পানি সেচে মাছ ধরার চেষ্টা করে, সাধারণ মানুষ বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালায়।”
বাড়িতে হামলার বিষয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে শাফী বলেন, “আমি শুধু ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি জানতে চেয়েছিলাম। পরে উত্তেজিত জনতা হামলা করে থাকতে পারে। এমন ঘটনা কাম্য নয়।”
বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, “ঘটনার বিষয়ে জানা গেছে। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।