হরতালেও বাস চালানোর ঘোষণা মালিক সমিতির

টুইট ডেস্ক : সংঘর্ষের জেরে মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর বিএনপি রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিলেও বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহকে উদ্ধৃত করে সেখানে বলা হয়, “বিএনপি, জামায়াত, শিবিরের ডাকা আগামীকালের হরতালে ঢাকা শহর, শহরতলী ও আন্তঃজেলা রুটে বাস মিনিবাস চলাচল অব্যাহত থাকিবে।”

মালিক সমিতি বলছে, “সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বিএনপি, জামায়াত, শিবিরের ডাকা রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতালের ব্যাপারে সমিতির ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা, ঢাকার বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি, রুট মালিক সমিতি এবং শ্রমিক নেতাদের সাথে তাৎক্ষণিক আলোচনাক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।”

সমিতির নেতারা সকল রুটে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য সমিতি ও কোম্পানিভুক্ত মালিকদেরকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘জনবিরোধী’ এ হরতালে মালিক-শ্রমিকরা ‘কখনো সাড়া দেবে না, বরং ঘৃণার সাথে প্রত্যাখান করছে’।

“সিদ্ধান্ত মোতাবেক, মালিক-শ্রমিকরা রোববারের হরতাল প্রত্যাখ্যান করে ঢাকাসহ এর আশে-পাশের জেলাগুলোতে বাস ও মিনিবাস চলাচল অব্যাহত রাখবে। তবে আন্তঃজেলা রুটে গাড়িগুলো যাত্রী পাওয়া সাপেক্ষে চলাচল করবে।”

রোববার গাড়ি চলাচলে যাতে কোনো বাধা না আসে, সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের এক দফা দাবিতে শনিবার দুপুরে নয়া পল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। এর পাল্টায় দুপুরে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ ডাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২০ শর্তে দুই দলকেই অনুমতি দেয় পুলিশ।

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উদ্বেগের মধ্যে সকাল থেকে রাজধানীতে নগর পরিবহনের বাস একপ্রকার বন্ধ থাকে। দূরপাল্লার বাসও ঢাকায় ঢুকেছে কম। সকাল থেকেই ঢাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

এর মধ্যে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাকরাইলে দলটির কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ বাঁধে।

ঘটনাস্থলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এরপর দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয় এবং তা নয়া পল্টন, ফকিরাপুল ও রাজারবাগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

কাকরাইল চার্চের সামনে একটি পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি কর্মীরা। তাদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।

সংঘর্ষের মধ্যে দৈনিক বাংলার মোড় এলাকায় এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হন। আহত প্রায় অর্ধশত পুলিশ সদস্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।