পদ্মা ব্যাংকের প্রতারিত আমানতকারীদের মানববন্ধন, ন্যায়বিচারের দাবি
টুইট ডেস্ক : পদ্মা ব্যাংক পিএলসি-র প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত শত শত আমানতকারী রাজধানীর গুলশান-২ এলাকার ব্যাংকের কর্পোরেট কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছেন। ব্যাংকের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে আমানতকারীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, পদ্মা ব্যাংকে সুপরিকল্পিত দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। এই কেলেঙ্কারির মূল হোতা হিসেবে তাঁরা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস শরাফাত এবং সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খানের নাম উল্লেখ করেন।
বক্তারা বলেন, এই দুই ব্যক্তি অতীতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে একসঙ্গে কাজ করার সময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং পরবর্তীতে একাধিক ব্যাংকে একসঙ্গে থেকে একটি দুর্নীতির চক্র গড়ে তোলেন। সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠতা ব্যবহার করে তারা ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেন এবং একাধিক সহযোগীকে নিয়োগ দিয়ে বেআইনি ঋণ কার্যক্রম চালান।
মানববন্ধনে দাবি করা হয়, পদ্মা ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের সাত কর্মকর্তা-মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আহমেদ, তারেক রিয়াজ খান, সৈয়দ রফিকুল হক, কাজী নাজমুদ্দিন নাফে, আবদুল্লাহ আল হারুন, সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম এবং ব্যবসায়িক অংশীদার হাসান তাহের ইমাম-এই চক্রের মূল সদস্য ছিলেন। তারা বিদেশে অর্থ পাচারের সাথেও জড়িত বলে দাবি করা হয়।
অবসর গ্রহণের পরও এই ব্যক্তিরা নতুন ব্যাংকে পুনরায় নিয়োগ পাওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বক্তারা। তারা বলেন, এটি একটি বৃহৎ ব্যাংকিং অপরাধ এবং এর বিরুদ্ধে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
তাদের তিন দফা দাবি:
১. অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত।
২. অভিযুক্তদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা, পাসপোর্ট বাতিল ও দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা।
৩. বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে স্বচ্ছ রোডম্যাপ প্রকাশ, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরা কবে ও কীভাবে অর্থ ফেরত পাবেন তা স্পষ্টভাবে জানানো হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত আমানতকারীরা বলেন, “এটি কেবল আমাদের ব্যক্তিগত ক্ষতির প্রশ্ন নয়, বরং দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারানোরও ইঙ্গিত। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এর ভয়াবহ পরিণতি হবে।