ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়ে স্বস্তিতে স্মার্টফোন ও কম্পিউটার বাজার

টুইট ডেস্ক: মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যকে বাড়তি শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্কের আওতা থেকে এই পণ্যগুলোকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রোল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এসব পণ্য ট্রাম্পের আরোপিত ১০ শতাংশের ন্যূনতম শুল্ক ও চীনের ওপর উচ্চ হারের অতিরিক্ত শুল্ক থেকেও মুক্ত থাকবে।

বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তকে চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রথম বড় ছাড় হিসেবে দেখছেন। ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি বিশ্লেষক ড্যান আইভস একে “গেইম-চেঞ্জার” বলেও অভিহিত করেছেন। তার ভাষায়, “স্মার্টফোন ও চিপকে শুল্কের বাইরে রাখা প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বপ্নের মতো খবর।”

বিবিসি জানায়, এ ছাড়ের ফলে সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল, মেমোরি কার্ডসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশও এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে। সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয়েছে ৫ এপ্রিল থেকে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই ছাড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে চীন থেকে কারখানা সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়ার অংশ। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এখন আর সেমিকন্ডাক্টর, চিপ, স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ তৈরিতে চীনের ওপর নির্ভর করতে পারে না।”

ট্রাম্প নিজেও জানিয়েছেন, তার শুল্কনীতি আমেরিকার স্বার্থে এবং দেশের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করছে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা অনেক টাকা নিচ্ছি, এবং এটাই দেশের জন্য ভালো।”

তবে প্রযুক্তি খাতে শুল্ক ছাড় এলেও কিছু পণ্য এখনো ফেন্টানিল সংক্রান্ত ২০ শতাংশ শুল্কের আওতায় রয়েছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, যদি এই খরচ সরাসরি ভোক্তাদের ওপর চাপানো হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোনের দাম তিনগুণ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, অ্যাপলের ৮০ শতাংশ আইফোন চীনে তৈরি, যা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় বাজার। তবে চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে অ্যাপল সম্প্রতি ভারত ও ভিয়েতনামে উৎপাদন সম্প্রসারণ করছে।

চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওপরও বাড়তি শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করলেও, পরে ঘোষণা দেন-চীন ছাড়া অন্য দেশগুলোর জন্য তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। যারা পাল্টা শুল্ক আরোপ করেনি, তারা জুলাই পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে শুল্ক দেবে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে উদ্দেশ্য হলো আরও ভালো বাণিজ্য সুবিধা আদায় করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান ও শিল্পায়ন বাড়ানো।