গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ: খাদ্য সংকট
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বর্বর হামলা এবং অবরোধের কারণে ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ইসরায়েলের অত্যাচারের ফলে প্রতিদিনই ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানী ঘটছে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ উঠলেও, ইসরায়েল তাদের নৃশংস পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে।
গাজার খাদ্য সংকট
ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ঘোষণা করেছেন, গাজার সীমান্তে গমের একটি দানাও প্রবেশ করবে না। তিনি দাবি করেছেন, গাজার উপত্যকায় খাদ্য সহায়তার প্রবাহ রোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর ফলে, গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
২ মার্চ থেকে গাজা সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল, যার ফলে ত্রাণ, মানবিক এবং চিকিৎসা সহায়তার প্রবাহ সম্পূর্ণভাবে থেমে গেছে।
হামলা ও প্রাণহানি
১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ১৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৩৪০০ জন আহত। এই হামলার ফলে পূর্বে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গেছে। বর্তমানে, গাজার ৫০ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
গাজার এই মানবিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালত পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলেছে। গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরায়েল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।
বাংলাদেশের একাত্মতা
বাংলাদেশ, তার জনগণের মানবিক সহানুভূতি এবং ফিলিস্তিনের প্রতি অবিচল সমর্থন জানিয়ে আসছে। বাংলাদেশের জনগণের এই একাত্মতা ফিলিস্তিনিদের কাছে আশার আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদানের মতে, “বাংলাদেশের মহত্ত্ব কখনও ভুলে যাবে না”।
বাংলাদেশের এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি আন্তর্জাতিক সমাজের প্রশংসা পেয়েছে এবং গাজার জনগণও বাংলাদেশকে তাদের একমাত্র বন্ধু হিসেবে দেখছে।
এভাবে, ইসরায়েলি হামলা এবং অবরোধের ফলে গাজার মানবিক সংকট তীব্রতর হয়ে উঠেছে। গাজায় খাদ্য, চিকিৎসা এবং ত্রাণ সহায়তার প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি আরো বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ এবং গাজার জনগণের প্রতি আরও মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।