ভারতের ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫: কার লাভ, কার ক্ষতি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের সংসদ সম্প্রতি ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫ পাস করেছে, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রতিবেদনে আমরা বিশ্লেষণ করব, এই বিলের ফলে কার লাভ হচ্ছে এবং কার ক্ষতি হতে পারে।​

ওয়াকফ কী?

ওয়াকফ হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা দানকৃত ধর্মীয় ও সামাজিক সম্পত্তি, যা ইসলামিক আইন অনুযায়ী বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। ভারতে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে প্রায় ৮.৭ লাখ সম্পত্তি রয়েছে, যা ৯.৪ লাখ একরজুড়ে বিস্তৃত। এটি সেনাবাহিনী ও রেলওয়ের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ ভূমির মালিক। ​

ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫

বোর্ডে অমুসলিম সদস্যের অন্তর্ভুক্তি: নতুন আইনে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে দুইজন অমুসলিম সদস্যের অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ​

সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি: ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় সরকারের হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ​

সম্পত্তির মালিকানা নির্ধারণ: বিতর্কিত ওয়াকফ সম্পত্তির মালিকানা নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে দেওয়া হয়েছে। ​

কার লাভ:

সরকার; ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনিক সুবিধা ও সম্পদের উপর বাড়তি নজরদারি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।​

অমুসলিম সম্প্রদায়; ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি পাবে, যা সমাজে সাম্প্রদায়িক সমন্বয় ও সমতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে।​

কার ক্ষতি:

মুসলিম সম্প্রদায়: ওয়াকফ সম্পত্তির উপর সরকারের বাড়তি নিয়ন্ত্রণ ও অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ঐতিহ্যের উপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখা হতে পারে। এতে তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক স্বায়ত্তশাসন কমে যেতে পারে।​

ওয়াকফ বোর্ড: বোর্ডের একচ্ছত্র ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তাদের কার্যকারিতা ও স্বাধীনতা প্রভাবিত হতে পারে, যা ওয়াকফ সম্পত্তির সঠিক ব্যবস্থাপনায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।​

ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫-এর মাধ্যমে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি ও অমুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হলেও, এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ঐতিহ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তাই, এই পরিবর্তনের ফলে কার লাভ ও কার ক্ষতি হচ্ছে, তা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।