নতুন নোট ছাড়া ঈদ! ঐতিহ্য বন্ধে উঠছে সমালোচনার ঝড়

ব‌দিউল আলম লিংকন: ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নতুন নোট ছাড়ার ঐতিহ্যগত প্রথা এবার বন্ধ থাকছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এবারের ঈদে নতুন নোট বিতরণ করা হবে না।

তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে নতুন নোট বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করেছে। সাধারণত, ঈদের সময় নতুন নোট বিতরণ একটি প্রচলিত প্রথা। তবে এবার এই কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঈদ মানেই নতুন পোশাক, নতুন খাবার, আর নতুন নোট।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এবার ঈদে নতুন নোট বিনিময় করা হবে না। তবে বাজারে প্রচলিত নোটের লেনদেন অব্যাহত থাকবে।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে জানা যায়, নতুন নোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত থাকায় কিছু পক্ষ আপত্তি তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন নোট বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে নতুন নোট বিতরণ একটি দীর্ঘদিনের প্রচলিত প্রথা। এই প্রথা বন্ধ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কিছু নাগরিক এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন, কারণ ঈদে নতুন নোট বিতরণ একটি আনন্দের অংশ।

তবে অন্যরা মনে করেন, যদি নোটের নকশা নিয়ে আপত্তি থাকে, তাহলে বিতরণ স্থগিত করা যৌক্তিক।

বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে এবং ব্যাংকগুলোর শাখায় গচ্ছিত নতুন নোট বিনিময় না করে সংরক্ষণ করতে বলেছে।

সার্বিকভাবে, ঈদে নতুন নোট বিতরণ বন্ধের এই সিদ্ধান্ত সমাজে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকে এই প্রথা বন্ধ হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করছেন, আবার কেউ কেউ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি জানিয়েছে, এবারের ঈদে নতুন নোট বিতরণ করা হবে না। তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

ঈদ আনন্দের অন্যতম অংশ হলো নতুন টাকা। ছোটদের ঈদ সালামি দেওয়ার সময় নতুন নোটের বিশেষ আকর্ষণ থাকে। ফলে নতুন নোট বিতরণ বন্ধের সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের ঈদ আনন্দে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন। এক পক্ষের মতে, নতুন নোট বিতরণ বন্ধের পেছনে কোনো নির্দিষ্ট মহলের চাপ থাকতে পারে। বিশেষ করে নতুন নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি সংযোজনের কারণে কোনো মহল হয়তো বিতর্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।

অন্যদিকে, সমালোচকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারকে চরম সমালোচনার মুখে ফেলবে। ঈদে নতুন নোট বিতরণ বন্ধ করার মাধ্যমে সরকার সাধারণ মানুষের আবেগ ও ঐতিহ্যকে অবমূল্যায়ন করেছে। ঈদ মানেই নতুন পোশাক, নতুন খাবার, আর নতুন নোট। সেই আনন্দে হঠাৎ বাধা সৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে, সরকার কি সত্যিই বাজারে নতুন নোট না ছাড়ার মতো পরিস্থিতিতে পড়েছে, নাকি এটি কোনো মহলের ষড়যন্ত্র?

জনগণের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও একথা সত্য, নতুন টাকা ছাড়া হলে মানুষের ঈদ আনন্দ আরও পূর্ণতা পেত। এই বিতর্কের মধ্যেই সরকার কীভাবে জনমত সামাল দেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।