সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে মার্কিন উদ্বেগের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া ঢাকার

টুইট ডেস্ক:।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড সম্প্রতি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও ইসলামি সন্ত্রাসবাদের উত্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ভারতে অনুষ্ঠিত একটি বৈশ্বিক গোয়েন্দা সম্মেলনে অংশগ্রহণকালে এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চলমান নির্যাতন, হত্যা ও নিপীড়ন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।

গ্যাবার্ড আরও উল্লেখ করেন যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভা ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে ইসলামি চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদী উপাদানের উত্থান নিয়ে উদ্বেগ এখনও রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যক্রম একই আদর্শ ও লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত, যা ইসলামি খিলাফতের মাধ্যমে শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

গ্যাবার্ডের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে বলেন, গ্যাবার্ডের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর ও ক্ষতিকর, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনামকে আঘাত করে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বরাবরই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ ইসলাম পালনের ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত এবং সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গ্যাবার্ডের মন্তব্য নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়নি, যা একটি গোটা দেশকে অন্যায়ভাবে ভুলভাবে উপস্থাপন করে। বাংলাদেশকে ইসলামি খিলাফতের ধারণার সঙ্গে ভিত্তিহীনভাবে যুক্ত করা দেশটির অসংখ্য নাগরিক ও বিশ্বব্যাপী তাদের বন্ধু ও অংশীদারদের কঠোর পরিশ্রমকে খাটো করে, যারা শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে যে কোনো ধরনের ইসলামি খিলাফত ধারণার সঙ্গে দেশকে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক নেতা ও জনপরিচিত ব্যক্তিত্বদের এ সংবেদনশীল বিষয়গুলো সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রকৃত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, এমন কোনো মন্তব্য করা উচিত নয় যা ক্ষতিকর ধারণাকে শক্তিশালী করে, ভয় উসকে দেয় বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়।

বিশ্বব্যাপী চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যথাযথ তথ্য ও সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে যুক্ত থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।