৫ বছরে এমপি ফারুকের বেড়েছে ৯ কোটি টাকা ও ৬০ বিঘা জমি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৮ সালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থ ছিল শূন্য। সেই শূন্য থেকে নিজ নামে জমা হয়েছে তিন ধাপে ৯ কোটি ৩৮ হাজার ৬০৬ টাকা। নির্ভরশীলদের নামে ২০১৮ সালেও কোনো জমি ছিল না। এ বছর নির্ভরশীলদের নামে জমি হয়েছে ৬০ বিঘা।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর সম্পদের হলফনামা ঘেঁটে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২০০৮ সাল থেকে তিনি এ আসনে এমপি রয়েছেন। তার বাড়ি নগরীর সাগরপাড়া এলাকায়।

২০০৮ সালে প্রথমবার এমপি হওয়ার আগে নগদ টাকা ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৫০ টাকা। স্ত্রীর নামে নগদ টাকা ছিল ৫০ হাজার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ছিল নিজ নামে ৩০ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

২০০৮ সালে ফারুক চৌধুরীর গাড়ি বলতে ছিল ৪০ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ। এখন তার গাড়ি বহরে যোগ হয়েছে ৬৩ লাখ টাকার প্রাইভেটকার, ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৮৯৭ টাকার শুল্কমুক্ত জিপসহ নিজ ও নির্ভরশীলদের নামে বিভিন্ন মূল্যের পরিবহন।

২০১৮ সালে ফারুক চৌধুরী নিজ নামে নগদ টাকা দেখান ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ৬০২ টাকা। নির্ভরশীলদের নামে কোনো টাকা ছিল না। গতবার স্ত্রীর নামে ৩৩ লাখ ৯৭ হাজার ১১৪ টাকা ছিল। ২০২৩ সালে এসে স্ত্রীর নগদ টাকা কমে হয়েছে ১১ লাখ ৩১ হাজার ১১৪ টাকা। তবে বেড়েছে নির্ভরশীলদের নামে। শূন্য থেকে নির্ভরশীলদের নামে এবার নগদ টাকা জমা হয়েছে ২৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৬ টাকা।

২০১৮ সালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ কিছুই ছিল না। শূণ্য থেকে এবার ফারুক চৌধুরীর নিজ নামে তিন ধাপে জমা হয়েছে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ৯৬ হাজার ৬০৬ টাকা, ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২ কোটি ৯৪ লাখ ১২ হাজার টাকা; যা মোট ৯ কোটি ৩৮ হাজার ৬০৬ টাকা।

গতবার ২০১৮ সালে অর্জনকালীন মূল্যের ৬৩ লাখ টাকার প্রাইভেটকার, ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৮৯৭ টাকার শুল্কমুক্ত জিপ, ১৮ লাখ টাকার দুটি ট্রাক দেখিয়েছিলেন ফারুক চৌধুরী। এবার ২০২৩ নিজ নামে অর্জনকালীন সময়ের মূল্যে ১৮ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ১৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার, নির্ভরশীলদের নামে ১২ লাখ ও ৫ লাখসহ মোট ১৭ লাখ টাকা মূল্যের পরিবহন দেখিয়েছেন।

২০১৮ সালে নিজ নামে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ৬০ বিঘা জমি দেখান। নির্ভরশীলের নামে কোনো জমি সেবার ছিল না। এবার নিজ নামে আগের ৬০ বিঘা জমির সঙ্গে নির্ভরশীলদের নামে নতুন করে আরও ৬০ বিঘা জমি দেখিয়েছেন।

২০১৮ সালে নিজ নামে অকৃষি জমি দেখান ১০ বিঘা। গতবার হেবামূলে অর্জিত জমি দেখান দশমিক ১৬২০, বণ্টননামামূল্যে দশমিক ৭৯ শতাংশ, হেবাবিল এওয়াজ মূল্যে দশমিক ১৬২১ পরিমাণ জমি দেখান। স্ত্রীর নামে দেখান দশমিক ১১৬২ একর জমি। এর উপর পাকাবাড়ি অর্জনকালীন মূল্যে ২২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেখান। এবার অকৃষি জমি নিজ নামে দেখান ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকার।

২০১৮ সালে বিসিক শিল্প নগরীতে ১৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকার বিনিয়োগ দেখান। এবার ২০২৩ সালে দেখান ৮৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ। এবার বিসিকে বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৬৯ লাখ টাকার।

২০১৮ সালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ফ্লাটক্রয়ে নিজের বিনিয়োগ ছিল ৮ লাখ ৫০ হাজার ও ৩৫ লাখ, স্ত্রী কর্তৃক বিনিয়োগ ছিল ৬৫ লাখ টাকা। এবার নিজ নামে ৯৬ লাখ ৮০ হাজার, স্ত্রীর নামে ৬৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ দেখান।

২০০৮ সালে দ্য থিম রিয়েল স্টেট লিমিটেডের নামে কোনো টাকা না থাকলেও ২০১৮ সালে দেখানো হয় ৮৫ লাখ টাকা নিজ নামে, স্যানাপ বাটনের নামে ৯৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে পূর্বাচলে কিস্তির টাকা ছিল ৩১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এবার ২০২৩ সালে নিজ নামে অন্যান্য সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে ৫৪ লাখ ৬২ হাজার।

২০০৮ সালে সঞ্চয়পত্রের স্থায়ী আমানত নিজ নামে ছিল ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গাড়ি বলতে ছিল ৪০ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ। স্বর্ণ ছিল নিজ নামে ২০ ভরি ও স্ত্রীর নামে ১৫ ভরি। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী টিভি ফ্রিজ উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ছিল।

আসবাবপত্র ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। দিনার ইন্ডাস্ট্রিজে শেয়ার মূলধন ছিল ৬ লাখ টাকা। লিটিল কনস্ট্রাকশন ইকুইপমেন্টস এ বিনিয়োগ ছিল নিজ নামে ৭ লাখ ২২ হাজার টাকা।

এছাড়াও ২০০৮ সালে স্থাবর সম্পত্তি নিজ নামে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত কৃষি জমি ৬০ বিঘা। অকৃষি জমি ছিল ১০ বিঘা ও আবাসিক বাড়ির অংশ।