রুয়েটে জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতায় শিক্ষকসহ ৪ জন বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) প্রশাসন জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, আন্দোলন দমনে সংশ্লিষ্টতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তাসহ চারজনকে বরখাস্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত রুয়েটের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মুরতুজা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরখাস্তকৃতদের মধ্যে রয়েছেন, রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ও রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিদ্ধার্থ শংকর সাহা। আর কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রকৌশল শাখার সহকারী প্রকৌশলী ও রুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈম রহমান নিবিড় এবং পদার্থবিদ্যা বিভাগের ডাটা প্রসেসর ও কর্মচারী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মহিদুল ইসলাম।
এছাড়া, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের প্রকৌশলী ও ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে হামলার ইন্ধন, নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ ও সিদ্ধান্তের কারণ
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র আন্দোলনে সরকারি নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, নির্যাতন-সহিংসতায় জড়িত থাকা এবং সরকারি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগ উঠেছিল বরখাস্ত হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৫ আগস্টের পর বিনা অনুমতিতে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টিও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বরখাস্ত হওয়া নাঈম রহমান নিবিড় ও মো. মহিদুল ইসলাম গত ৪ আগস্ট রুয়েটের প্রধান ফটক দিয়ে ধারালো অস্ত্রসহ প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং বোমা হামলায় সম্পৃক্ত ছিল।
এছাড়া, শিক্ষক শিদ্ধার্থ শংকর সাহার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনবিরোধী অবস্থান, আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের অবমাননার অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে রুয়েট ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বরখাস্তের দাবিতে আন্দোলন করেছিল এবং প্রশাসনের কাছে আবেদন জমা দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে রুয়েট ক্যাম্পাসে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।