ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার মামলা: অক্টোবরে রায় প্রত্যাশা

টুইট ডেস্ক: গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর বিচারকাজ এগিয়ে চলেছে।

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ১৬টি মামলার মধ্যে তিন-চারটির রায় অক্টোবরে হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চার মাস আগে পূর্ণ কার্যক্রম শুরু করেছে, যেখানে ৩০০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে ১৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে চারটির তদন্ত চলতি মাসের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরপর চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হবে।

তিনি আরও জানান, ডিফেন্স আইনজীবীদের প্রস্তুতির জন্য তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে, এরপর এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। নিরবচ্ছিন্ন শুনানির কারণে চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে কয়েকটি মামলার রায় দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেই হিসেবে অক্টোবরের মধ্যে তিন-চারটি মামলার রায় পাওয়া যেতে পারে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, ১৯৭৩ সংশোধন করে তদন্ত সংস্থাকে আরও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তারা ট্রাইব্যুনালের আদেশ ছাড়াই যেকোনো স্থানে তল্লাশি চালাতে, আলামত জব্দ করতে ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যেকোনো স্থানে পাঠাতে পারবে। একইসঙ্গে, আসামিদের সম্পত্তি ফ্রিজ করা ও বিদেশযাত্রা নিষিদ্ধ করার ক্ষমতাও ট্রাইব্যুনালকে দেওয়া হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর বিচারকাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এসব মামলার আসামি। তিনি আশাবাদী, এক বছরের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন হবে।

তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জাতিসংঘের তদন্ত টিমের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, যা বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার দ্রুত এগিয়ে চললেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন এই মামলাগুলোর স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতার ওপর। আসন্ন রায়গুলো বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি দেশি-বিদেশি আস্থার নির্ণায়ক হতে পারে।