ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ: রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিফলন

টুইট ডেস্ক: ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালেও এক্সকেভেটর দিয়ে বাড়িটি ভাঙছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।

রাত ৮টার দিকে বিক্ষোভকারীরা বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। রাত সোয়া ১১টার দিকে বুলডোজার ও এক্সকাভেটর ব্যবহার করে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা বাড়ির সামনে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালও ভেঙে ফেলে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালেও এক্সকেভেটর দিয়ে বাড়িটি ভাঙছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

সকাল সাড়ে ৭টা দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাত থেকে চলা কর্মসূচি কিছু সময়ের বিরতি দিয়ে আবারও চলছে। শত শত মানুষে এখনও ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ভার্চুয়াল ভাষণ প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অন্যান্য সংগঠন ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ডাক দেয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জড়ো হয় এবং রাত বাড়ার সাথে সাথে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই ঘটনার দিকে নজর দিয়েছে।

বিবিসি বলছে “বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ধ্বংস করা হলো। দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।”

সিএনএন তুলে ধরে “বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ শাসনকালে সংঘটিত গুম, খুন ও দমননীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে।”

আল জাজিরা থেকে বলা হয় “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।”

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো অস্থিতিশীল। শেখ হাসিনা সরকারকে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যেখানে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে এবং গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু ছিল। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বারবার আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক নীতির অভিযোগ তুলেছে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে থাকবে। এটি দেশের গভীর রাজনৈতিক বিভাজনের প্রতিচ্ছবি, যা ভবিষ্যতে আরও উত্তপ্ত পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা দরকার।