ধর্মভিত্তিক দলের গুরুত্ব বাড়ছে, বিএনপি-জামায়াতের দৌড়ঝাঁপ
- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ভোট ও জোটের নতুন সমীকরণ
- বিদেশি হস্তক্ষেপ চান না বিএনপি-জামায়াত
- নৌকার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নীরব কৌশল
বদিউল আলম লিংকন: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে। তিন দশকের মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার দূরত্ব এখন দৃশ্যমান, যা নির্বাচনী কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ভোটের নতুন সমীকরণ
নির্বাচনের মাঠে বিএনপির দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াত এবার দলটির প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর গুরুত্ব বাড়ায় বিএনপি ও জামায়াত উভয়েই তাদের পাশে টানার চেষ্টা করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা সরকারবিরোধী প্রতিটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তারা। অন্যদিকে, জামায়াতের নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, তারা শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বরং দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের নিয়ে বৃহৎ পরিসরে নির্বাচনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
জোট নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা?
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত উভয়েই তাদের কৌশল পুনর্বিন্যাস করছে। জামায়াত ইতোমধ্যে ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে দলটির নায়েবে আমির। তবে সেটি জোটবদ্ধ হয়ে নাকি সিট আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের ভিত্তিতে হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
অন্যদিকে, বিএনপি এখনো স্পষ্টভাবে তাদের নির্বাচনী পরিকল্পনা জানায়নি। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “জোট গঠনের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে অনেক দল ছিল। এখন যদি নির্বাচন ঘোষিত হয়, কারা আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা তখনই নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
ধর্মভিত্তিক দলের গুরুত্ব
বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিমের সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ এবং ঢাকায় চরমোনাই পীরের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের সাক্ষাৎ নির্বাচনী রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে জামায়াতের নায়েবে আমির এটিকে নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করেছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা সরাসরি কিছু বলেননি। তবে বিএনপি মনে করে, আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতির বিচার হওয়া উচিত।
এছাড়া, বিএনপি ও জামায়াত উভয়েই নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ চান না বলে জানিয়েছেন। জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, “বিদেশি হস্তক্ষেপ এড়াতে সবাইকে সচেতন থাকা উচিত।”
নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনীতির মঞ্চ ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্কের নতুন সমীকরণ, জোটের ভবিষ্যৎ এবং ভোটের কৌশল নিয়ে রাজনীতিতে যে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে, তা নির্বাচনী ফলাফলে কী প্রভাব ফেলে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।