শেখ রেহানার সহযোগী ক্যাপ্টেন গিয়াসের বিপুল সম্পদ
ধানমন্ডি ফ্ল্যাট: ২২.৫ কোটি টাকা
উত্তরা ফ্ল্যাট: ৭.৬৮ কোটি টাকা
মিরপুর ও পূর্বাচল: ৬.৬ কোটি টাকা
অন্যান্য সম্পদ ও ব্যবসা: ১৫ কোটি টাকা
মোট: ৫১.৭৮ কোটি টাকা
টুইট ডেস্ক: নৌপরিবহন অধিদপ্তরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিপুল সম্পদ ও আর্থিক জালিয়াতি বিষয়ে পাঁচ বছর আগে অভিযোগ পেলেও এখনো তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেনি।
২০১৮ সালে দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নৌপরিবহন অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গিয়াসউদ্দিনের মাসিক বেতন তিন হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা)। চাকরিজীবনে এই বেতন থেকে তার মোট আয়ের পরিমাণ ৫ কোটি টাকার কাছাকাছি হওয়ার কথা। কিন্তু তার সম্পদ ও আয় একেবারেই অসংগতিপূর্ণ।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদের সম্পদের তালিকায় রয়েছে—
ধানমন্ডি:
ইস্টার্ন ডালিয়ায় ৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট (২৫০০ স্কয়ার ফিট)।
বিশ্বাস ক্রিডেন্সে সাড়ে ৭ কোটি টাকার ফ্ল্যাট (৩৬০০ স্কয়ার ফিট)।
রেজাস ড্রিমে ৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট (২৪০০ স্কয়ার ফিট)।
৬ নম্বর রোডে সাড়ে ৫ কোটি টাকার আরও একটি ফ্ল্যাট।
উত্তরা:
স্বপ্নধারা হাউজিংয়ে ২.৮৮ কোটি টাকার ফ্ল্যাট (২৪০০ স্কয়ার ফিট)।
ডমিনোতে ১.৪৪ কোটি টাকার ফ্ল্যাট।
মিরপুর ডিওএইচএস: ১.৬ কোটি টাকার ফ্ল্যাট (২২০০ স্কয়ার ফিট)।
পূর্বাচল মেরিন সিটি: ৫ কাঠার প্লট।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা: ৫ কাঠার প্লট।
তার স্ত্রী সাজেদার নামে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে ‘ওশান মেরিটাইম একাডেমি’ এবং বন্ধ হওয়া ‘ওজিমা মেরিন একাডেমি’র ৫১% শেয়ারও রয়েছে।
গিয়াসউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নেভিগেশন সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন দেশের জাহাজের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
গিয়াসউদ্দিন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেত্রী শেখ রেহানার আস্থাভাজন এবং মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানের শ্যালক। এ কারণে এতদিন ধরে তিনি দুদকের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মাকসুদ আলম বলেন, “নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গিয়াসউদ্দিনের বিষয়ে তদন্ত করছে। তবে এ বিষয়ে দুদকের কোনো অনুসন্ধানের বিষয়ে আমি অবগত নই।”
অন্যদিকে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “কোনো অপরাধীই ছাড় পাবে না। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”