শ্যামনগরে বিএনপির সংঘর্ষ থামাতে দৌড়ে ছুটলেন ইউএনও

শ্যামনগরে বিএনপির সংঘর্ষ থামাতে দৌড়ে ছুটলেন ইউএনও

ইউএনও রনী খাতুনের এই দুঃসাহসিক ভূমিকা প্রমাণ করেছে, দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন কর্মকর্তা ঝুঁকি নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব।

টুইট ডেস্ক: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে দুঃসাহসিক ভূমিকা রেখে ভাইরাল হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন। কোনও ধরনের নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই সংঘর্ষের মাঝখানে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ঘটনায় সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক নেতাদের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে শ্যামনগর উপজেলার ইসমাইলপুর এলাকায় সদ্যঘোষিত উপজেলা বিএনপির নেতাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিলুপ্ত কমিটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। বিএনপি নেতা আশেক-ই এলাহী মুন্নার বাড়ির সামনে দুই পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। খবর পেয়ে শ্যামনগর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালায়।

সংঘর্ষ চলাকালে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইউএনও রনী খাতুন দেহরক্ষী ও পুলিশ সদস্যদের পিছু ফেলে একাই দৌড়ে সংঘর্ষের মাঝখানে চলে যান। তার এমন সাহসী পদক্ষেপ দেখে দুই পক্ষই থমকে যায়। পরিস্থিতি শান্ত করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।

সংঘর্ষে শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর, ইউএনওর দেহরক্ষী আনসার সদস্য সাইফুল ইসলামসহ ২২ জন আহত হন। স্থানীয় বিএনপি নেতা আশেক-ই এলাহী মুন্না ও আওয়ামী লীগ কর্মী আহমদ আলী কয়ালের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইউএনও রনী খাতুনের সাহসিকতায় বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তার এমন ভূমিকার জন্য উভয় পক্ষের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ তাকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে ইউএনও মোছা. রনী খাতুন বলেন, “পরিস্থিতি শান্ত করতে কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতে হতো। আমি চেষ্টা করেছি সংঘর্ষ থামিয়ে মানুষের জানমালের ক্ষতি রোধ করতে।”

বিএনপির সোলায়মান কবীর পক্ষের যুবদল নেতা সফিকুল ইসলাম দুলু বলেন, “একজন নারী হয়ে ইউএনও ম্যাডাম যেভাবে পরিস্থিতি সামলেছেন, তা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।” অন্যদিকে জেলা বিএনপির সদস্য আশেক-ই এলাহী মুন্না বলেন, “তার সাহসিকতা না থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত।”

শ্যামনগরে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসনের নেতৃত্বে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা এলাকায় টহল দিয়েছে।

ইউএনও রনী খাতুনের এই দুঃসাহসিক ভূমিকা প্রমাণ করেছে, দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন কর্মকর্তা ঝুঁকি নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব।