গাজায় আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে যু’দ্ধবিরতি
টুইট ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জন্য বহুল প্রতীক্ষিত দিন আজ রোববার। আজ থেকেই কার্যকর হচ্ছে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি।
গাজার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কাতার। এর মধ্য দিয়ে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরা চলা রক্তক্ষয়ের অবসান হতে যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতায় সহায়তাকারী কাতারের পক্ষ থেকে গতকাল শনিবার এ তথ্য জানানো হয়। এতে আরও মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর।
জানা গেছে, শনিবার সকালে ছয় ঘণ্টা বৈঠকের পর নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা চুক্তি অনুমোদন করে। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, হামাস ও ইসরায়েল এবং মধ্যস্থতাকারীদের সমন্বয়ে স্থানীয় সময় রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গাজার বাসিন্দাদের সাবধানতা ও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার এবং সরকারি সূত্র থেকে নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছি।’
গতকাল ইসরায়েলের জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদন পায়। এর আগে টানা ছয় ঘণ্টা বৈঠক করেন নেতানিয়াহু সরকারের মন্ত্রীরা।
নেতানিয়াহুর দপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার চুক্তির (ফ্রেমওয়ার্ক) অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল সরকার। আজ থেকে এটা কার্যকর হবে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি ঠিক কখন শুরু হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, আজ স্থানীয় সময় বেলা দুইটার আগে কোনো বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে না।
আজ যে যুদ্ধবিরতি শুরু হচ্ছে, তা তিন ধাপে কার্যকর করা হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপ হবে ছয় সপ্তাহের। এ সময় ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।
এর বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী থাকা ১৯ বছরের কম বয়সী নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়া হবে। এ সময় গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর একটি অংশকে সরিয়ে নেওয়া হবে।
এরপর শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপ। এই ধাপে ইসরায়েলের বাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। এর বিপরীতে আরও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে।
গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়া হবে। আর তৃতীয় ধাপে ইসরায়েলের কাছে মৃত জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে। গাজা পুনর্গঠন শুরু হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গ্রুপ হামাস প্রথমে আক্রমণ করে। পালটা জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। এই যুদ্ধে ৪৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২৩ লাখ। অন্যদিকে জিম্মিদের অনেককেই মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গাজায় হামাসের কাছে এখনো ৯৮ জন জিম্মি জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় রয়েছেন।