এবার অবরোধ-হরতালের ডাক দিলো বিএনপি

টুইট ডেস্ক : মাঝে একদিনের বিরতি দিয়ে আবার বুধ ও বৃহস্পতিবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডেকেছে বিএনপি। এই অবরোধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃহস্পতিবার হরতালও ডেকেছে দলটি।

সোমবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বুধবার সকাল ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত অবরোধের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালেরও ডাক দেন তিনি। বিএনপি-জামায়াত ও সমমনাদলগুলোর সপ্তম দফা অবরোধ শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার ভোর ছয়টা।

গত সাত দফায় বিএনপির অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে মঙ্গলবার বিরতি রাখা হচ্ছে। এর বাইরে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কর্মসূচি থাকে না। গত ১৫ নভেম্বের ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন।

আওয়ামী লীগ এরইমধ্যে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করে ঘোষণা দিয়েছে। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী ঘোষণা দেওয়ার পথে। তবে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে হরতাল-অবরোধ অব্যঅহত রেখেছে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের সমমনা দলগুলো। তাদের দাবি, ‘একতরফা’ নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। এর আগে সাত দফা অবরোধ ডেকেছে বিএনপি।

অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র রিজভী বলেন, নির্বাচনে বিদেশি শক্তির থাবা পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। দেশি-বিদেশিদের আইওয়াশ করতে পাতানো নির্বাচনের কৌশল নিয়েছে সরকার। ভরাডুবির ভয়ে ভুয়া নির্বাচনের নতুন নাটক তৈরি করা হচ্ছে। ডামি প্রার্থী রেখে পাতানো নির্বাচনী খেলা শুরু হয়েছে। কমিশন এতে সহযোগিতা করছে। সরকারের নির্বাচনের অভিনব মডেলে বিশ্ববাসী অবাক।

তিনি বলেন, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের কারাগারে নিয়ে নির্বাচনী সার্কাস করতে দেয়া হবে না, এবার সফল হবে না।

রিজভী বলেন, পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দেয়া হচ্ছে, যা উদ্দেশ্যমূলক। ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হবে। তার দাবি, গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ১৩টি মামলায় ৩৮৫ জন গ্রেপ্তার ও এক হাজার ৪৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বর্তমান সরকারের পতন ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হবার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও তার সাথে আন্দোলন করা ৩৯টি রাজনৈতিক দল।

একই দাবিতে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিলো বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে সেই নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি গণফোরামের ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ভোটে অংশ নেয়। ভোটে ভরাডুবি ঘটে বিএনপির। এরপর কারচুপির অভিযোগ তোলে তারা। সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে এসে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেন।

এবার ২০১৪ সালের মত একই দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। ফিরে এসেছে সংঘাতের পরিবেশ। যানবাহনে অগ্নিংযোগ আর নাশকতার ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। বিএনপি বলছে, তফসিল প্রত্যাখান করতে হবে। আর আওয়ামী লীগের বলছে, সংবিধান নির্দেশিত পথেই নির্বাচন হবে।