ক্রিসমাস ট্রি পোড়ানোর ঘটনায় সিরিয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ
টুইট ডেস্ক : ক্রিসমাস ট্রি পোড়ানোর ঘটনার জের ধরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে সিরিয়ায়। এতে দেশটির নতুন ইসলামপন্থী কর্তৃপক্ষকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানানো হচ্ছে।
সুকায়লাবিয়াহ শহরের প্রধান চত্বরে ক্রিসমাস ট্রিতে আগুনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। দেশটির মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এই শহরটি খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
হায়াত তাহরির আল-শাম এইচটিএস ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, এ ঘটনায় কয়েকজন বিদেশী যোদ্ধাকে আটক করা হয়েছে। ইসলামপন্থী এই সংগঠনটির নেতৃত্বেই সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকার উৎখাত হয়েছে। সিরিয়ার ধর্মীয় ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের স্বাধীনতা ও অধিকার সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছে সংগঠনটি।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ক্রিসমাসের আগের রাতে ক্রিসমাস ট্রিতে আগুন দিচ্ছে দুই মুখোশধারী। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার পর সুকায়লাবিয়াহ চত্বরে বিক্ষুব্ধদের সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন এইচটিএস’র ধর্মীয় নেতা।
খ্রিস্টানদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে তাকে ক্রস ধরে থাকতে দেখা যায়, যা সাধারণত রক্ষণশীল ইসলামপন্থীরা করেন না।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানী দামেস্কের একাংশসহ বিভিন্ন এলাকায় আগের চেয়ে বেশি বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসে। দামেস্কের কাছে কাসা এলাকায় লোকজনকে বিদেশী যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। তারা বলছিলেন, ‘সিরিয়া এখন মুক্ত, নন-সিরিয়ানদের চলে যাওয়া উচিত।’
দামেস্কের কাছে বাব তৌমা এলাকায় বিক্ষোভকারীরা একটি ক্রস আর সিরিয়ার পতাকা বহন করছিলেন।
‘আমরা আমাদের ক্রসের জন্য জীবন দেবো’ এই স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা।
জর্জেস নামে একজন বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা যদি আমাদের খ্রিস্টান ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে আমাদের দেশে বাস করতে না পারি, তাহলে আমরা এখানে থাকব না।’
সিরিয়ায় অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর বসবাস আছে। এর মধ্যে আছে কুর্দি, আর্মেনিয়ান, আসিরিয়ান, খ্রিস্টান, দ্রুজ, আলাউয়ি শিয়া ও আরব সুন্নি। শিয়া ও সুন্নি মিলে দেশটির মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী।
দুই সপ্তাহ আগে বিদ্রোহীদের হাতে উৎখাত হয়েছেন দীর্ঘদিন যাবত প্রেসিডেন্ট থাকা বাশার আল-আসাদ। তিনি ও তার পিতা ৫০ বছরেরও বেশী সময় দেশটি শাসন করেছেন। এরপর বাস্তুচ্যুত সিরিয়ানদের অনেকে নিজেদের ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার তুরস্ক জানিয়েছে যে, ২৫ হাজারের বেশি সিরিয়ান দেশে ফিরেছে।
মঙ্গলবার নতুন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তাদের নেতা আহমেদ আল-শারা বিপ্লবী সব গ্রুপগুলোর সাথে সমঝোতায় পৌঁছেছেন যে সব গ্রুপকে এক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ আল-বাশির বলেছেন, বিদ্রোহী যোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করতে মন্ত্রণালয়টি পুনর্গঠন করা হবে।
সূত্র : বিবিসি