সালমান ও তার পরিবারের আর্থিক হিসাবের তথ্য চায় দুদক

টুইট ডেস্ক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে ৬৩টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়ে তথ্য চেয়েছে দুদক।

চিঠিতে সালমান ও তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ১৭টি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক হিসাবের তথ্যসহ যাবতীয় নথিপত্র আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ করা হয়েছে।

সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার অনুসন্ধান দলের প্রধান সংস্থাটির উপপরিচালক মনজুর আলম ও দলের সদস্য সহকারী পরিচালক সাদ্দাদ হোসেন চিঠি পাঠান।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), গণপূর্ত ও সাব রেজিস্ট্রার অফিসসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানেও তারা চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়, সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার জালিয়াতি, প্লেসমেন্ট শেয়ারে কারসাজি, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ার হোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট ও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ওইসব নথিপত্র সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।

সালমান, তার স্ত্রী সৈয়দা রুবাবা রহমান ও আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানের আর্থিক হিসাবের নথিপত্র এবং বেক্সিমকো ও এর সহযোগী ১৭ প্রতিষ্ঠানের নিজ ও যৌথ নামে ব্যাংক হিসাব, সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, ঋণ ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি নথিপত্র সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস লিমিটেড, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস লিমিটেড, অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেড, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস লিমিটেড, কোজি অ্যাপারেলস লিমিটেড, এসেস ফ্যাশন লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস লিমিটেড, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেড, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টেস লিমিটেড, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড, পিঙ্ক মেকার গার্মেন্টস লিমিটেড, প্ল্যাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেড, স্কাইলেট অ্যাপারেলস লিমিটেড, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস লিমিটেড, আরবান ফ্যাশন লিমিটেড ও উইন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেড।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব খোলার ফর্ম, কেওয়াইসি ফর্ম, টিপি এবং হিসাব খোলার পর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত হিসাব বিবরণী ও ঋণ হিসাব সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

গণ-আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের এক সপ্তাহ পর ১৩ আগস্ট নৌপথে পালানোর সময় ঢাকার সদরঘাটে গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে হতাহতের ঘটনায় নিউ মার্কেট থানার এক মামলায় ‘ইন্ধনদাতা’ হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কয়েক দফায় তাকে রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সহিংসতা ও প্রাণহানির অভিযোগে দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে গত ২২ আগস্ট দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানায় সংস্থাটি।

এর আগে গত ২৯ অগাস্ট সালমান, তার ছেলে ও পুত্রবধূর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেয় আর্থিক খাতের গোয়েন্দা বিভাগ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট- বিএফআইইউ।