গাড়িতেই রয়েছে হেলিপ্যাড-সুইমিং পুল, আরও আছে যেসব সুবিধা

টুইট ডেস্ক: আশির দশকের সিনেমায় ধনী ব্যক্তিদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বড় লম্বা সাদা গাড়িগুলোকে মনে আছে? যার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত দেখা যায় না। যদিও এখন আর খুব একটা সেই গাড়ি দেখা যায় না, তবে একটা সময় কিন্তু অনেকের স্বপ্ন ছিল এই গাড়ি কেনা।

আর ঠিক তেমনই একটি লিমোজিন গাড়ি হলো ‌‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’। দৈর্ঘ্যের দিক পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা এই গাড়ি রয়েছে গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও। ২০০৩ সালে দীর্ঘতম গাড়ি হিসেবে নজির গড়ে এই গাড়ি।

১৯৮৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার বারবাঙ্কে তৈরি করা হয় লিমো ক্যাডিলাক এলডোরাডোস। বিশেষ এই গাড়িটি তৈরি করান ‘কার ডিজাইনার’ জে ওহরবার্গ।

তৈরির সময় এই গাড়ির দৈর্ঘ্য ছিল ৬০ ফুট। গাড়িটির পেছন দিকে ছিল একজোড়া ভি৮ ইঞ্জিন। এবং গাড়িটির চলার জন্য ছিল ২৬টি চাকা। পরে এই গাড়িটির দৈর্ঘ্য আরও বাড়িয়ে তা ১০০ ফুট বা ৩০মিটার করা হয়। এরপরেই ২০০৩ সালে বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়ি হিসাবে গিনিসবুকে নাম তোলে এই গাড়ি।

নব্বইয়ের দশকে বহু সিনেমাতে এই লিমো গাড়ির ব্যবহার দেখা যায়। সেই সময় গাড়িটির ভাড়া ছিল ঘণ্টায় ৫০-২০০ ডলার। তবে সময়ের সঙ্গে এর ব্যবহার কমে আসে। অথচ এই গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ছিল প্রচুর। আবার এত লম্বা গাড়ি পার্কিং করাও অসুবিধা। পড়ে থাকতে থাকতে ভগ্নাবশেষে পরিণত হয় এই গাড়ি।

২০১৯ সালে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা ম্যানিং এবং ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর গাড়ি সংগ্রহ শালার মালিক মাইকেল ডেজার যৌথ ভাবে গাড়িটি কিনে মেরামত করার সিদ্ধান্ত নেন। গাড়িটি দুভাগে ভাগ করে ফ্লোরিডা নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা খরচ করে পুনরায় সারিয়ে তোলা হয় এই গাড়িকে।

ভোলবদলে নিজের রেকর্ড ভেঙেছে লিমো নিজেই। ১০০ ফুটের রেকর্ড ভেঙে এখন তার দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট ১.৫ ইঞ্চি। বা ৩০.৫ ইঞ্চি। এই গাড়িতে বর্তমানে রয়েছে ২৪টি চাকা। যার ওজন ৯০০০ কিলোগ্রামের বেশি।

এই গাড়ির পেছন দিকে রয়েছে একটি হেলিপ্যাড, একটি সুইমিং পুল এবং একটি আস্ত গলফ কোর্সও। ‌‌‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’ গাড়িতে একসঙ্গে ৭৫ জন বসতে পারে। গাড়ির ভেতরে রয়েছে বাথটাব, একাধিক টেলিভিশন সেট, রেফ্রিজারেটর, বসার জন্য আরামদায়ক সোফা। পেছনের দিকের দরজা দিয়ে গাড়ির ভেতর ঢুকে বসতে হয়।

সেই দরজা রিমোট দিয়ে খুলতে হয়। স্লাইডিং পদ্ধতির মাধ্যমে সেই দরজা খোলাবন্ধ হয়। তবে এই গাড়ি রাস্তায় চালানো সম্ভব নয়। তাই বর্তমানে অরল্যান্ডোরে একটি গাড়ি সংগ্রহশালায় অনান্য বিরল গাড়ির সঙ্গে এই গাড়িকেও রাখা রয়েছে।