এটা প্রতিশোধ নেওয়ার সময় নয়, বাংলাদেশ ইস্যুতে বলল যুক্তরাষ্ট্র

টুইট ডেস্ক : “বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু এবং অংশীদার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন দিয়ে যাবে এবং সবার জন্য মানবাধিকার নিশ্চিতের আহ্বান অব্যাহত রাখবে।

প্রবল গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ এবং সহিংসতায় হতাহতের খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা সব পক্ষকে সংযত এবং শান্ত হওয়ার জন্য আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিশোধ নেওয়ার সময় এটা নয়।”

তীব্র গণ আন্দোলনের মুখে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি স্থাপনা, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ঘর বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। চলমান এই সহিংসতায় গত দুই দিনে প্রায় দেড়শ মানুষের মৃত্যু খবর এসেছে।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র মঙ্গলবার লিখিত বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশে অব্যাহত সহিংসতার যেসব খবর আসছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন গোষ্ঠীকে নিশানা করে সহিংসতা হচ্ছে। পুলিশ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সহিংসতার খবরেও আমরা সমানভাবে উদ্বিগ্ন।

“বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু এবং অংশীদার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন দিয়ে যাবে এবং সবার জন্য মানবাধিকার নিশ্চিতের আহ্বান অব্যাহত রাখবে।”

এর আগে সোমবার রাতে দৈনিক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার ঘোষণা আমরা দেখেছি।

“আমি পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তী কোনো সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে আমরা সবপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহে অনেক প্রাণ ঝরেছে। এবং আগামী দিনগুলোতে শান্ত ও সংযমের আহ্বান আমরা করছি।

“অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই এবং আমরা আহ্বান করছি যে কোনো ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া যেন বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী হয়।”

ম্যাথু মিলার বলেন, গত সপ্তাহগুলোতে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হতাহতের’ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। যারা প্রিয়জন হারিয়েছে এবং যারা এখনো ভুগছে, তাদের সঙ্গে শোক ভাগাভাগি করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা এখন সহিংসতা বন্ধ এবং জবাবদিহিতার উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক মূলনীতিসমূহ, আইনের শাসন এবং বাংলাদেশিদের জনআকাঙ্ক্ষা মেনে নিতে হবে।”

সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘুসহ অন্যদের ওপর হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, “আমরা যে আহ্বান জানাচ্ছি তা হল, সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

“এখন, জবাবদিহিতার ধরনটা কেমন হবে, সেটা বাংলাদেশি আইনে হতে হবে। যারা সহিংসতা করেছে, আইন ভেঙেছে, তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।”