সুনামগঞ্জে বন্যার পানিতে কৃষকের ৪৪ কোটির ক্ষতি

টুইট ডেস্ক : অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে প্রায় দুই হাজার ২৬৭ হেক্টর ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রায় ১০ হাজার কৃষক পরিবার।

তাদের প্রায় ৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই কৃষকদের কেউ কেউ আবার স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবার চাষ করেছিলেন। ফলে তাদের মাথায় এখন ঋণের বোঝা।

সদর উপজেলার কৃষক মহিবুর রহমান বলেন, স্ত্রীকে দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ধুন্দল আর পটলের চাষ করি। অনেক ফুলও এসেছিল, ভেবেছিলাম যে কারণে টাকা ঋণ নিয়েছি তাতে আমি সফল হয়েছি। কিন্তু বন্যা আমার সেই ভাবনায় জল ঢেলে দিলো। এখন কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবো সে চিন্তা করছি।

লালপুর এলাকার কৃষক আলতাবুর রহমান বলেন, আমার সব জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এক ধাক্কায় সব শেষ। সুদে টাকা এনে চাষ করেছি। ধান বিক্রি করে টাকা পরিশোধের কথা।

দোয়ারাবাজার উপজেলার ডাউকেরখারা গ্রামের কৃষক জুবায়ের আহমদ বলেন, আমি ৫ একর জমিতে ডাটা, করলা, ধুন্দল, ঝিঙ্গার চাষ করেছিলাম। যেদিন পাহাড়ি ঢলে আমাদের গ্রামের বাধ ভেঙে যায়, সাথে সাথে স্রোতের তোড়ে সব কিছু ভেসে যায়। এখন যে জমিতে আমি আমার কষ্টের ফসল চাষ করেছিলাম সেখানে কিছুই নেই কাদা ছাড়া।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ বছর সুনামগঞ্জ জেলায় আউশ আবাদ হয়েছিল ৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে এবং গ্রীষ্মকালীন শাক সবজি চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ৩শ ৭৭ হেক্টর জমিতে।

এর মাঝে ১৭শ হেক্টর আউশ আবাদি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির ৫৬৭ হেক্টর জমি নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী সুনামগঞ্জে আউশধানের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে ৩৩ কোটি টাকার।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সুনামগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করেছি এবং তালিকা প্রণয়নের কাজ চলমান আছে।

ভবিষ্যতে সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।