রাসিকের হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক : আয় ও ব্যয় সমপরিমাণ ধরে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)। বুধবার দুপুরে নগর ভবনের হল রুমে সংবাদ সম্মেলন করে ১ হাজার ১৫ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ১০০ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন সিটি মেয়র এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। যা গত বছরের চেয়ে ৮ কোটি টাকা বেশী। সিটি করপোরেশনের সপ্তম পরিষদের এটিই প্রথম বাজেট।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের দেশ হবে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ। সেই পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্মার্ট রাজশাহী বিনির্মাণেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাজেটেও সেই বিষয়টিই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনেও স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ইতোমধ্যে গ্রহন করেছি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে রাজশাহী একটি উন্নত বাসযোগ্য স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাজেটের এর লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৭ কোটি ১৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৩২৩ টাকা ১১ পয়সা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার ৬১৮ কোটি ১১ লক্ষ ২ হাজার ২১০ টাকা ১৭ পয়সা দাঁড়িয়েছে। আয় ও ব্যয় সমপরিমাণ ধরে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৫ কোটি ৩৪ লক্ষ ৭০ হাজার ১০০ টাকা।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বর্তমানে রাজশাহী মহানগরী ধীরে ধীরে সিলিকন ও কম্পিউটার প্রযুক্তি নির্ভর সিটিতে পরিণত হচ্ছে। রাজশাহীতে এখন ঘরে বসে অনেক তরুণ-তরুণী ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমের ডলার আয় করছে। সমন্বিত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে প্রস্তাবিত ২০টি প্রকল্পের ১৬২টি উদ্যোগের মাধ্যমে রাজশাহীকে স্মার্ট নগরীতে রুপান্তর করতে লাগবে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা। জরুরি ভিত্তিতে বাছাই করে ২০২৪ সাল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে।
তিনি বলেন, স্মার্ট রাজশাহী সিটি বিনির্মাণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন কর্মশালা, স্মার্ট রাজশাহী ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ও স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
মেয়র আরও বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগিতায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ৬ দিনব্যাপি রাজশাহী মহানগরীর সকল সেবা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ ও রাজশাহীর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ ও দেশের প্রথিতযশা প্রকৌশলী, জনপ্রতিনিধি নিয়ে আগামীর স্মার্ট রাজশাহীর ধারণাপত্র তৈরী করা হয়েছে। এতে মোট ১৬২টি ইনিশিয়েটিভ রয়েছে, যা আগামী ১৫ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে স্মার্ট নগরীর জন্য তৈরি করা হবে স্মার্ট নাগরিক। যারা হবেন বুদ্ধিদীপ্ত, দক্ষ, উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল। করা হবে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি, ক্যাশলেস সোসাইটি, উদ্যোক্তামুখী, গবেষণানির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। স্মার্ট সরকারের মাধ্যমে করা হবে স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক সেবা প্রদান। যাতে থাকবে না কাগজ। উপাত্ত নির্ভর স্বয়ংক্রিয় সেবা হবে আন্তঃসংযুক্ত। প্রয়াস, বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়ার। যে সমাজ হবে সহনশীল, নিরাপদ ও টেকসই।
আমরা যত বেশি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারব, রাজশাহী মহানগরী তত এগিয়ে যাবে। রাজশাহী মহানগরী এগিয়ে গেলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও অল্প হলেও কাজে লাগবে। স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ ও আদায়ে ড্রোন দিয়ে জরিপসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা আগামীতে বাস্তবায়ন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাজেট প্রণয়ন কমিটির আহবায়ক ও ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিযাম উল আযীম, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, ১নং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর তাহেরা খাতুন, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিন, বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান প্রমূখ।