গাড়িতে চলাচলে ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি: গবেষণা

প্রতীকী ছবি

এম.বি. আলম: প্রতিটি দিন, হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন ধরণের যানবাহনে চলাচল করেন। বিশেষ করে গাড়িতে সময় কাটানো সরল এবং সহজ, এই ধরণের চলাচল অনেকের পছন্দ। তবে, একটি গবেষণা এখন উল্লেখযোগ্য তথ্য উপস্থাপন করেছে যেটি দেখা যায় যানবাহনে চলাচলে ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি থাকতে পারে। এই প্রতিবেদনে এই গবেষণার ফলাফল এবং সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য প্রস্তুত করা হবে বলে জানা গেছে।

এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভয়ানক তথ্য। এতে জানা গেছে, গাড়িতে যারা চলাচল করেন তারা মনের অজান্তে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক শুষে নেন।

গবেষণার মূল অংশের মধ্যে বলা হয়েছে যে, যানবাহনে চলাচল করার সময় মানুষের মনের অজান্তে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক শুষে পরিণত হতে পারে। গবেষকরা ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০১টি বৈদ্যুতিক, গ্যাস এবং হাইব্রিড গাড়িতে গবেষণা করেছেন এবং পায়েছেন যে, ৯৯ শতাংশ গাড়িতে টিসিআইপিপি নামের একটি রাসায়নিক পাওয়া গেছে। যেটির মধ্যে অন্যান্য জটিল রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে যা ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিসেবে ধারণা করা হয়েছে।

গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন যে, বেশির ভাগ গাড়িতে টিডিসিআইপিপি ও টিসিইপি নামের দুটি রাসায়নিক পাওয়া গেছে, যা ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিসেবে ধারণা করা হয়। এছাড়াও, এই উপাদানগুলো স্নায়বিক এবং প্রজনন ক্ষেত্রেও ক্ষতিকারক হিসেবে ধারণা করা হয়েছে।

গবেষণার প্রধান গবেষক রেবেকা হোলেন বলেছেন, গাড়িতে চলাচলে সময় কাটানো মানুষের জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকির বিষয়। বিশেষত, শিশু এবং যেসব চালক লম্বা সময় ভ্রমণ করেন তাদের জন্য এটি বেশি চিন্তার। তারা প্রাপ্ত বয়স্কদের চেয়ে বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় এবং এই রাসায়নিক পদার্থগুলির প্রভাবে তাদের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

গবেষকরা জানানো গেছে যে, গরমের সময় গাড়ির যন্ত্রাংশ থেকে রাসায়নিক পদার্থের বেশি নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে, যা গাড়ির চলাচলের সময় এগুলি বেশি মাত্রার উপস্থিতিতে বাড়ায়।

এই গবেষণার ফলাফল আলোকে, গাড়ি উৎপাদকদের এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। উপযুক্ত পরামর্শ এবং প্রায়োগিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গাড়ি ডিজাইন এবং চলাচলে পরিবর্তন আনা উচিত। এছাড়াও, বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উন্নতির মাধ্যমে গাড়ির ডিজাইনে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার মিনিমাইজ করা যেতে পারে।

চলমান গবেষণা এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির মাধ্যমে, আমরা আশা করি গাড়ির চলাচলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর দিকে একটি ধারাবাহিক প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান উদ্ভাবন করতে পারবে। এটি আমাদের সমস্যার সমাধানে একটি ধারাবাহিক পথ হতে পারে এবং মানুষের জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

সম্প্রতি এই গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান গবেষক ও ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের টক্সিলোজি বিজ্ঞানী রেবেকা হোলেন বলেছেন, ‘একজন চালক গাড়িতে যে পরিমাণ সময় ব্যয় করে সেটি বিবেচনা করে বলা যায়, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকির বিষয়।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘বিশেষ করে শিশু এবং যেসব চালক লম্বা সময় ভ্রমণ করেন তাদের জন্য এটি বেশি চিন্তার। কারণ শিশুরা প্রাপ্ত বয়স্কদের চেয়ে বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়।’

গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্যানসার সৃষ্টিকারী এই উপাদানের মূল সূত্র হলো গাড়ির সিটের ফোম। গাড়ি উৎপাদকরা সিটের ফোমে রাসায়নিক এবং অন্যান্য উপাদান মেশান। তারা আরো খুঁজে পেয়েছেন এসব উপাদানের কোনো উপকারিতাই নেই। যদিও গাড়ি উৎপাদকরা মূলত আগুনের বিষয়টি চিন্তা করে আসনের ফোমে এগুলো ব্যবহার করেন। কিন্তু এগুলো আগুন ছড়িয়ে পড়া বা না পড়ার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখে না।

গাড়িতে চলাচলের মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকের জন্য চিন্তাজনক। এই ধরনের গবেষণা মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের চেতনা বাড়িয়ে তোলা উচিত। আমরা যেন এটি প্রতিরোধ করতে পারি। এটি যেন গাড়ি উৎপাদকদের ধারনায় আসে এবং তাদের প্রোডাক্ট উন্নীত করার জন্য প্রেরণা বাড়িয়ে তুলে এটাই প্রত্যাশা।