নিউ ইয়র্কে ৩শতাধিক প্যালেস্টাইনপন্থি বিক্ষোভকারী গ্রেফতার

পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় গ্রেফতার একজন বিক্ষোভকারী । ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব ডেস্ক: নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাস থেকে প্যালেস্টাইনপন্থি প্রায় ৩শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেয়র এরিক অ্যাডামস।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বুধবারের এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র অ্যাডামস এ তথ্য দিয়েছেন।

সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না দিয়ে ‘বহিরাগত’ আন্দোলনকারীদের দায়ী করে মেয়র অ্যাডামস জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন শতাধিক প্যালেস্টাইনপন্থি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি ‘বহিরাগত’ আন্দোলনকারীর সংখ্যাও নির্দিষ্ট করে বলেননি।

মেয়র অ্যাডামস বলেন, ‘যদিও ভবনটি (হ্যামিল্টন হল) যারা ভেঙেছে তাদের মধ্যে ছাত্র ছিল, কিন্তু এটি এমন ব্যক্তিরা পরিচালনা করেছেন যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।’

মেয়র বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে এবং বাকস্বাধীনতা আমাদের সমাজের মূল ভিত্তি, তবে বহিরাগতরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হাইজ্যাক করেছে এবং ছাত্রদের উত্তেজিত করতে প্রভাবিত করেছে।’

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে নিউইয়র্ক পুলিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিল্টন হল ভবনে আটকে থাকা বেশ কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে এবং আইভি লীগ কলেজে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চেষ্টার পর একটি প্রতিবাদ শিবির সরিয়ে দিয়েছে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে হলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্ররা ‘শেইম, শেইম!’ বলে চিৎকার করে পুলিশকে বিদ্রুপ করে।

এ সময় পুলিশ কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে হাত পিঠের পেছনে জিপ-টাই দিয়ে বেঁধে গ্রেফতার করে একটি বাসে তুলে নিয়ে যায়।

“ওই সময় বিক্ষোভকারীরা ভবনের বাইরে ‘ফ্রি, ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন!’ স্লোগান দিতে থাকে এবং বাকিরা চিৎকার করে ‘ছাত্রদের যেতে দাও!’ বলে আওয়াজ তুলে।”

বিক্ষোভের আয়োজনকারী ছাত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্টহেড ডাইভেস্টের সুয়েদা পোলাট বলেছে, তারা ক্যাম্পাসে কোন সমস্যা বা বিপদ তৈরি করেনি।

কলাম্বিয়ার স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সে পড়া একজন প্যালেস্টেনিয়ান ও বিক্ষোভের নেতা মাহমুদ খলিল অন্য অনেক ছাত্রের মতো প্রতিবাদে বহিরাগতদের যুক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের পোস্ট করা আগের কিছু ভিডিওতে অবশ্য কলাম্বিয়াতে নথিভুক্ত বা নিযুক্ত নন এমন সমর্থক এবং কর্মীদের প্রতিবাদ ক্যাম্প পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।

প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা আরও বলেছেন, ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে ১৯৬৮ সালের বড় বিক্ষোভের কৌশলগুলো সম্পর্কে জানতে তারা সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগেই সতর্ক করেছে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা একাডেমিক বহিষ্কারের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও নিউ অরলিন্সের তুলেইন বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যারিযোনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হারলেমের নিউ ইয়র্কের সিটি কলেজে প্রতিবাদ ক্যাম্পগুলো সরাতে এবং গ্রেফতার করতে পুলিশ ডাকা হয়।

নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সিটি কলেজেও কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।