বিদ্যুৎ সংকট: গ্রাম ও শহরে ভোগান্তি

ছবি: কাল্পনিক

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকটের প্রভাব জনজীবনে ব্যাপক হারে প্রতিফলিত হচ্ছে। এই সংকট শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে আরও তীব্র, যা কৃষক ও সাধারণ মানুষের জীবনে বাড়তি কষ্ট সৃষ্টি করছে। লোডশেডিংয়ের ফলে ঈদের ছুটিতে যাত্রা ও গ্রামে থাকাকালীন সময়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।

শেষ চৈত্রের গরমে দেশের জনজীবন অতিষ্ঠ। চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পেয়ে সেই কষ্ট আরও বেড়েছে। শহরের চেয়ে গ্রামে বিদ্যুতের সরবরাহ অপেক্ষাকৃত কম, লোডশেডিং বেশি। এর মধ্যেই ঈদের ছুটিতে ঢাকাসহ বড় শহরগুলো থেকে গ্রামে যাওয়া মানুষ পড়েছে বাড়তি ভোগান্তিতে। একই সঙ্গে সেচ মৌসুমে লোডশেডিংয়ের কারণে সময়মতো বিদ্যুৎ না পেয়েও বিপাকে পড়েছেন অনেক কৃষক।

সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে কুমিল্লা অঞ্চলে। এরপর ক্রমান্বয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাওয়া অঞ্চলগুলো হলো-ময়মনসিংহ, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত শনিবার দিনে সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ২৪ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ করা হয় ১৪ হাজার ৬৪ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, এদিন লোডশেডিং হয় ৯৬০ মেগাওয়াট। গত রবিবার ১৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ হয় ১২ হাজার ৯৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। অর্থাৎ, এদিনও চাহিদার চেয়ে ২৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হয়। এ দুই সরকারি ছুটিতে এই লোডশেডিংয়ের তথ্য মূলত সাবস্টেশন পর্যায়ের। অবচয় ক্ষতি ও সিস্টেম লসের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পিডিবির হিসাবমতে, সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে কুমিল্লা অঞ্চলে। এরপর ক্রমান্বয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাওয়া অঞ্চলগুলো হলো-ময়মনসিংহ, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর। সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও বরিশালে লোডশেডিং অপেক্ষাকৃত কম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিডিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে গড়ে সর্বোচ্চ দেড় হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং হয়েছে। সামনে এটি ২ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যেতে পারে।

তবে গ্রাহকেরা তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলছেন, এলাকাভেদে দৈনিক ৫ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে। রাজধানীতে এলাকাভেদে এক থেকে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক স্থানে ইফতার, তারাবির নামাজ ও সেহরির সময় বিদ্যুৎ না পেয়ে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এবার ঈদের ছুটিতেও লোডশেডিং অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে শুধু ঈদযাত্রা নয়, গ্রামে থাকাকালীন শহুরে বা গ্রামীণ সব শ্রেণির মানুষেরই ভোগান্তি ও বিপত্তি বাড়বে।