লেন্স ও সেন্সর ছাড়াই ছবি তুলতে পারে যে ক্যামেরা
টুইট ডেস্ক : ক্যামেরার উদ্ভাবন মানবসমাজকে উল্লেখযোগ্যভাবে বদলে দিয়েছে। ক্যামেরার মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ উপায়ে চিত্রধারণ সম্ভব হয়েছে। এর আগে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হয়নি এমন বস্তু সম্পর্কে ধারণা পেতে সেটির বর্ণনা বা আঁকা চিত্রের ওপর নির্ভর করতে হতো।
ক্যামেরা উদ্ভাবনের পর মানুষ আলোকচিত্রকে অধিকতর নির্ভরযোগ্য প্রমাণ বলে বিবেচনা করতে শুরু করে। এখন মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে ছবি তৈরি করতে পারছে। তবে ডিপফেকের কারণে বিভ্রান্তিও তৈরি হচ্ছে।
এআই ব্যবহারের মানুষের এ আগ্রহকেই কাজে লাগিয়ে বিজোই কারম্যান একটি লেন্সবিহীন ক্যামেরা তৈরি করেছেন। প্যারাগ্রাফিকা নামের এ ক্যামেরা লোকেশন ডেটা ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ছবি তৈরি করে।
ব্যবহারের দিক থেকে প্যারাগ্রাফিকা অনেকটা প্রচলিত ক্যামেরার মতোই। ব্যবহারকারী এ ক্যামেরা সহজেই বহন করতে পারেন, ক্যামেরা তাক করতে পারেন এবং শাটার বাটন চাপতে পারেন। ক্যামেরার পেছনে একটি এলসিডি স্ক্রিনে ছবিটি দেখা যাবে। তবে এ ছবিটি বাস্তব নয় এটি সম্পূর্ণ এআই দিয়ে তৈরি ছবি। প্যারাগ্রাফিকায় সাধারণ ক্যামেরার মতো লেন্স এবং ইমেজ সেন্সর নেই।
ব্যবহারকারী যখন ছবি তোলেন প্যারাগ্রাফিকা তখন সে স্থানের সব তথ্য এটির স্ট্যাবল ডিফিউশন এআই মডেলে জমা করে। বর্তমান লোকেশন বের করার জন্য প্যারাগ্রাফিকায় রয়েছে জিপিএস মডিউল। এরপর স্থানীয় আবহাওয়া পরিস্থিতি জানার জন্য এটি ওপেন ওয়েদার ওয়েবসাইটের এপিআই ব্যবহার করে। আর উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোগত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তথ্য পেতে ব্যবহার করে ম্যাপবক্সের এপিআই। ম্যাপবক্স বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের জন্য মানচিত্র সরবরাহ সেবা দেয়।
প্যারাগ্রাফিকার ওপরের ডায়ালগুলো দিয়ে ব্যবহারকারী সার্চের পরিধি ঠিক করতে পারবেন, এর নয়েজ সিড এবং একটি প্যারামিটার নির্ধারণ করে স্ট্যাবল ডিফিউশনটি কাঙ্ক্ষিত বস্তুর কত নিখুঁত ছবি তৈরি করতে পারে।
এসবগুলো মিলিয়ে ফলাফল হিসেবে যে ছবি উপস্থাপন করা হয় তা আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তৈরি করা ছবি, তবে বাস্তবতার সঙ্গে পার্থক্য থাকে না। এ ছবির বৈশিষ্ট্য আমাদের স্মৃতিতে থাকা বস্তুর ছবির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।
এই প্যারাগ্রাফিকায় হার্ডওয়্যারের ব্যবহার করা হয়েছে রাস্পবেরি পাই ৪ মডেল বি। এটি মূলত একটি সিঙ্গেল বোর্ড কম্পিউটার। একটি এলসিডি টাচস্ক্রিন রয়েছে। কারম্যান দাবি করেন, স্ক্রিনটি ১৫ ইঞ্চি। যদিও হ্যাকস্টারের প্রতিবেদনে ৫ ইঞ্চি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্ভবত এটি লেখার ভুল।
এসব যন্ত্রপাতি থ্রিডি প্রিন্টেড একটি বাক্সের মধ্যে সাজানো থাকে, যা দেখতে পুরোনো আমলের লাইকা ক্যামেরার মতোই।
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য কারম্যান প্যারাগ্রাফিকার একটি ওয়েব অ্যাপ তৈরি করেছেন, যা এই ক্যামেরার ভার্চ্যুয়াল ভার্সন হিসেবে কাজ করে। এ ওয়েবসাইটে এখন ব্যবহারকারী বেশি হওয়ায় এটি লোড হতে বেশি সময় নিতে পারে।