এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বাদ পড়ছেন কত এমপি
নিজস্ব প্রতিবেদক : গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে দিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে সেদিন থেকে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করবে।
এবার মনোনয়ন ফরমের দাম ৩০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বৈঠকে বলেছেন, নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে তার তালিকা পুরোপুরি ভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, ৩০০ আসনের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা এখন প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে। বর্তমানে যারা আওয়ামী লীগের এমপি আছেন তাদের মধ্যে অন্তত ১২৭ জন আগামী নির্বাচনে নৌকার টিকিট পাবেন না।
সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ ধরে নিয়েছে বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। কাজেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে এটা মাথায় রেখেই মনোনয়ন তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ইঙ্গিত করেছেন, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে মনোনয়ন বাণিজ্য ও নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ১৭২ জন পুরনো প্রার্থী আগামী নির্বাচনে নৌকার টিকিট পাবেন। ১২৭ জন যে নতুন প্রার্থী রয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জন রয়েছেন যারা ২০০৮ বা ২০১৪ নির্বাচন করেছে। ২০১৮ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি।
একেবারে নতুন এবং গত ২০০৮ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত কোন নির্বাচনেই প্রার্থী হননি এমন অন্তত ৩০ জন আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন। মনোনয়নে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ব্যবসায়ী, সাবেক আমলা, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তাদেরকেও রাখা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, তরুণ এবং প্রবীণদেরকে মিলিয়ে এই মনোনয়ন তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনশ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত শরিকদের জন্য ৫০টি আসন ছেড়ে দেবে। এ নিয়ে শরিকদের সঙ্গে খুব শিগগিরই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। যে আসনগুলো শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হবে সেই আসনগুলোতে যারা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আছে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। তবে আওয়ামী লীগ মহাজোটের অধীনে নির্বাচনে যাবে নাকি শুধুমাত্র ১৪ দলকে নিয়ে নির্বাচনে যাবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ ১৪ দলগত ভাবে নির্বাচন করতে চায়। জাতীয় পার্টিকে আলাদা অবস্থানে রেখে নির্বাচনে প্রার্থী দিতে চায়। কারণ বিএনপি যদি শেষ মুহুর্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে কোন আসন যেন প্রার্থী শূন্য না হয় সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
একাধিক সূত্র বলছে, প্রার্থীতা মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু কিছু আসনে আওয়ামী লীগ কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছে। যে সমস্ত আসন ঝুঁকিপূর্ণ, যে আসনগুলোয় আওয়ামী লীগ কখনোই নির্বাচিত হতে পারেনি, সেই সমস্ত আসনে অপেক্ষাকৃত তরুণদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যেন তারা ভবিষ্যতে সংগঠন গোছাতে পারে। নির্বাচনে হারার পরও যেন তারা সাংগঠনিক কাজে নিজেদেরকে ব্যস্ত রাখতে পারে।