যখন-তখন অস্ত্র বের করে ভয় দেখাতো সেই শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীকে গুলির ঘটনার পর একে একে বেরিয়ে আসছে শিক্ষক রায়হান শরিফের বিভিন্ন অপকর্মের চিত্র। তিনি প্রায়ই শ্রেণি কক্ষে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে টেবিলে রেখে ক্লাস নিতেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি কলেজে পিকনিকে যাওয়ার সময় বাসের মধ্যে পিস্তল বের করে শিক্ষার্থীদের দিকে তাক করে ভয় দেখান ওই শিক্ষক।

বুধবার (৬ মার্চ) তৃতীয় বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পিকনিক ছিলো কক্সবাজারে। সেদিন পিকনিকে যাওয়ার পথে বাসের মধ্যে হঠাৎ নিজের কোমরে থাকা পিস্তল বের করেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। পিস্তল বের করে শিক্ষার্থীদের দিকে তাক করে ভয় দেখান তিনি। এ সময় পিস্তল দেখে পিকনিকের বাসের মধ্যে থাকা সবাই ভয় পেয়ে যান।

২০২৩ সালের মার্চ মাসে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন শিক্ষক রায়হান শরিফ। শ্রেণিকক্ষে অস্ত্র নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতেন তিনি।

কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের ভয়ে রাখতে ক্লাস রুমের টেবিলে নিজের আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র রেখে ক্লাস নিতেন তিনি। তার মনমতো না হলেই চলতো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। কথা মতো না চললে বন্দুক তাক করে গুলির প্রস্তুতি নিত। সোমবার একইভাবে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালের দিকে পিস্তল তাক করেন তিনি।

এ সময় পায়ে গুলি লাগলে ক্লাসের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন তমাল। এরপর বিক্ষোভে শুরু হয় ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে রায়হান শরিফের যত অপকর্ম।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে শিক্ষকের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি বিদেশি পিস্তলেই অবৈধ।

বুধবার গ্রেপ্তার ডা. রায়হান শরীফকে আদালতে তোলা হলে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি দেন তিনি। এ সময় ডা. রায়হান শরীফ পিস্তল দিয়ে শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার কথা স্বীকার করেন।