হাইতিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট হত্যা মামলায় স্ত্রীসহ ৫০ জন অভিযুক্ত

হাইতির সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসি ও তার স্ত্রী মার্টিন মইসে।

বিশ্ব ডেস্ক: হাইতির সাবেক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসির হত্যা মামলায় দেশের প্রধানমন্ত্রী ক্লাউডি জোসেফসহ ৫০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি মামলার প্রথম অভিযুক্ত মার্টিন মইসি ছিলেন তাঁর স্ত্রী। এই অভিযোগটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে এবং একটি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মার্টিন মইসি একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার স্বামীর হত্যা করেছিলেন।

২০২১ সালে নিজ বাড়িতে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন হাইতির সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসি। এ সময় আহত হন তার স্ত্রী মার্টিন মইসেও। অপ্রত্যাশিত সেই ঘটনা নাড়িয়ে দেয় গোটা বিশ্বকে।

‘এখন শোনা যাচ্ছে, মইসি হত্যাকাণ্ডে কলকাঠি নেড়েছিলেন খোদ ফার্স্ট লেডিই। আর তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন দেশটির তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লাউডি জোসেফ। তাদের যোগসাজশেই অকালে প্রাণ হারান হাইতির নেতা।’

সম্প্রতি মইসে হত্যা মামলায় মার্টিন মইসে, ক্লাউডি জোসেফসহ ৫০ জনকে অভিযুক্ত করেছেন হাইতির একজন বিচারক। সেই নথি ফাঁস হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে।

আইবোপোস্ট নামে ঐ সংবাদমাধ্যমটির বরাতে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিচারক ওডালথার ওয়েসার ভলতেয়ারের নথি অনুসারে, মার্টিন মইসি নিজে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লাউডি জোসেফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

২০২১ সালের ৭ জুলাই হাইতির রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্সের উপকণ্ঠে অবস্থিত বাড়ির শোবার ঘরে ঢুকে জোভেনেল মইসিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পঞ্চম বিচারক হিসেবে ঐ ঘটনা তদন্তে নেতৃত্ব দেন বিচারক ওয়ালথার।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তার ১২২ পৃষ্ঠার নথি ফাঁস হয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে। নথিতে মার্টিন মইসিকে ‘সন্ত্রাস এবং অপরাধমূলক যোগসাজশে’র অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। দেশটির সবশেষ প্রেসিডেন্টকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত ৫০ জনের মধ্যে একজন তিনি।

অভিযোগপত্রে বিচারক বলেছেন, মিসেস মইসি তার স্বামীর হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তা এতটাই অসংগতিপূর্ণ ছিল যে, সেটি তাকে সন্দেহভাজন করে তোলে। প্রমাণ হিসেবে মইসি হত্যাকাণ্ডের সময় হাইতির জাতীয় প্রাসাদের মহাসচিব লিওনেল ভালব্রুনের দেওয়া একটি বিবৃতিও উল্লেখ করা হয়েছে নথিতে।

‘‘ভালব্রুন অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট হত্যার দুদিন আগে প্রাসাদে এসেছিলেন ফার্স্ট লেডি। এরপর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে প্রাসাদ থেকে ‘বেশ কিছু জিনিস’ সরিয়েছিলেন তিনি। মার্টিন কী কী জিনিস সরিয়েছিলেন তা স্পষ্ট নয়। তবে আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, তার ক্রিয়াকলাপগুলো ‘আন্দাজে’ বা ‘দৈবক্রমে’ ঘটেনি। বরং সেসময় সামনের ঘটনাগুলো সম্পর্কে পূর্ব জ্ঞান ছিল মিসেস মইসির।’’

হাইতির রাজনৈতিক দলের সাথে সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে জোভেনেল মইসির হত্যার পরে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান অত্যন্ত অস্থির হয়ে পড়ে। বর্তমানে হাইতি জনগণের মাঝে অস্থিরতা এবং আত্মঘাতী অবস্থান বাড়ছে।