সমালোচনার মুখে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট নোভাকের পদত্যাগ
বিশ্ব ডেস্ক: শিশু যৌন নিপীড়নের মামলার এক আসামির সাজা মওকুফ করে দেয়ার পর সমালোচনার কারণে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান প্রেসিডেন্ট কাটালিন নোভাক।
জাতির উদ্দেশে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি শিশুদের দুর্বলতাকে কাজে লাগায়নি ধারণা করে আমি এপ্রিলে তাকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমি ভুল করেছি কারণ আমার ক্ষমার ঘোষণা পেডোফিলিয়ার প্রতি জিরো টলারেন্স নীতির ওপর প্রশ্ন তৈরি করে।’
“তার ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে শুক্রবার দেশটির রাজধানী বুদাপেস্টে তার পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন “
গত বছরের এপ্রিলে হাঙ্গেরিতে পোপ ফ্রান্সিসের সফর উপলক্ষে নোভাক প্রায় দুই ডজন আসামির সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করেন। ক্ষমাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে একটি চিলড্রেনস হোমের একজন সহকারী পরিচালকও ছিলেন যিনি ওই সংস্থার সাবেক পরিচালককে তার অপরাধ গোপন করতে সহায়তা করেন।
‘রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওই পরিচালকের বিরুদ্ধে ২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদেরকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয় এবং সাজা হিসেবে তাকে আট বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। তাকে সহায়তাকারী সহকারী পরিচালককে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।’
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, যখন বিক্ষোভকারীরা তার কার্যালয় ঘেরাও করেন তখন নোভাক একটি আনুষ্ঠানিক সফরে কাতারের দোহায় ছিলেন।
অপরাধীকে ক্ষমা ঘোষণার ঘটনায় হাঙ্গেরির বিরোধী দলগুলোও নোভাকের পদত্যাগ দাবি করে আসছে।
নোভাক হাঙ্গেরির কট্টরপন্থি জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওবানের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র। তিনি এর আগে দেশটির পরিবার মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।
নোভাক ২০২২ সালে প্রথম নারী হিসেবে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। শনিবারের ভাষণটি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার শেষ ভাষণ ছিল।
ভুল করেছেন উল্লেখ করে নোভাক টেলিভিশনে প্রচারিত তার ভাষণে ভিক্টিম ও তাদের পরিবারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আঘাত করেছি এমন সব মানুষের কাছে এবং যেসব ভিক্টিমরা ভাবছেন যে তাদের প্রতি আমার সমর্থন নেই তাদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।’
তিনি আরও বলেছেন যে, তিনি সবসময়ই শিশু ও পরিবারগুলোর সুরক্ষায় কাজ করেছেন।