ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে স্বর্ণ কেনার হিড়িক

টুইট ডেস্ক : ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার উদ্বেগের মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগের খোঁজে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে। বিশ্ববাজারে এক আউন্স সোনার দাম শুক্রবার দুই হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহের পর দাম কোনো দিনই দুই হাজার ডলার ছাড়ায়নি বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।

ডাউ জোনসের তথ্য অনুসারে, গতকাল দিন শেষে কমেক্স প্ল্যাটফর্মে ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ২০ ডলার ৬০ সেন্ট বা ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে সর্বোচ্চ ২০০৯ ডলার ২০ সেন্টে ওঠে। তবে দিন শেষে তা কিছুটা কমে ১ হাজার ৯৯৪ ডলার ৪০ সেন্টে স্থির হয়।

৩১ জুলাইয়ের পর দিনের লেনদেনে স্বর্ণের দাম কখনোই দুই হাজার ডলার ছাড়ায়নি এবং এই দামে স্বর্ণ বেচাকেনা নিষ্পত্তি হয়নি। সবচেয়ে বাজার চলতি স্বর্ণের দাম এই সপ্তাহে বেড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।

সিটি ইনডেক্স ও ফরেক্স ডটকমের বাজার বিশ্লেষক ফাওয়াদ রাযাকজাদা বলছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে গত দুই সপ্তাহে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ার কারণে মূলত স্বর্ণের দাম বেড়েছে।’

সুইজারল্যান্ডের মূল্যবান ধাতু পরিশোধনকারী ও ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান এমকেএস প্যাম্পের মেটাল স্ট্র্যাটেজিস্ট নিকি শিয়েলস বলেন, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বাঁচিয়ে সর্বোচ্চ মুনাফার চাহিদা স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে।

তবে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের বন্ডের ওপর প্রভাব ফেলেছে। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে বন্ড চাপে আছে। মূল্যস্ফীতির কারণে এ থেকে তেমন লাভ করা যাচ্ছে না। সাধারণত বন্ড থেকে বেশি লাভ হলে স্বর্ণের প্রতি চাহিদা কমে যায়।

রাযাকজাদা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হলে স্বর্ণের দাম আবার কমতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি বড় নিয়ামক হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘কাজেই স্বর্ণের দাম নিচে নামতে খুব বেশি কিছু লাগবে না। কিন্তু আপাতত, যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে এর পেছনে যে পাগলা ঘোড়ার গতি আছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ব্যবসায়ী হিসেবে, আমাদের অবশ্যই পরিস্থিতিকে স্বীকার করে স্থিতিশীল বাজারের সন্ধানের আগে এই ধারা পাল্টানোর প্রধান ধরনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

এদিকে, বিশ্ববাজারের সঙ্গে খুব একটা সম্পর্ক না থাকলেও দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। ১৬ অক্টোবর পাঁচ দিনের ব্যবধানে দাম আবারও বেড়েছে। ভালো মানের তথা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে ‘এ’ ক্যাটাগরির এক ভরি স্বর্ণের দাম এখন ১ লাখ ৫৪৪ টাকা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৫ হাজার ৯৯৫, ১৮ ক্যারেটের ৮২ হাজার ২৩১ এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ৬৮ হাজার ৫৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।