আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক : এক দিনের বিরতি দিয়ে আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার আবার অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি। ঘোষণা অনযায়ী, বুধবার সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার বিকেলে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তৃতীয় দফার অবরোধের নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দ্বিতীয় দফার অবরোধ কর্মসূচি শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়। এর একদিন বিরতি দিয়ে বুধবার থেকে তৃতীয় দফায় ৪৮ ঘন্টার অবরোধ শুরু হবে।
বিএনপির কর্মসূচির ঘোষণার আগেই তাদের আন্দোলনসঙ্গী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এর আগে বৃহস্পতিবারও এলডিপির ঘোষণার পর বিএনপির অবরোধের ঘোষণা আসে।
৭ নভেম্বর বিএনপি বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে। টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের পর ওইদিনটিতে অবরোধ কর্মসূচির বিরতি দিলো বিএনপি।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে সেই সমাবেশ থেকে ২৯ অক্টোবর হরতাল ডাকে দলটি।
একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর সারা দেশে অবরোধ করে তারা। আলাদা কর্মসূচি দিয়ে সঙ্গে যোগ দেয় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলও একই কর্মসূচি দেয়। সেই অবরোধ শেষে রোব ও সোমবার নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকা হয়।
২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন থেকে অবরোধ কর্মসূচির শুরুর পর থেকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন সড়কে বাস, ট্রাক, অটোরিকশায় আগুন দেওয়ার এবং ভাঙচুর করার খবর এসেছে।
২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের পর রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৩৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন, দলের ভাইস চেয়ারপারসন শামসুজ্জামান দুদু, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীও।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে সরকার। পুলিশের পাশাপাশি এখন র্যাবকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। মহিলা নেতাকর্মীরাও রেহাই পাচ্ছে না ক্ষমতাসীনদের নিপীড়ন নির্যাতনের হাত থেকে। সারাদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রিজভীর দাবি, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কালিমা লেপন করতে সরকার পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসন্ত্রাস ঘটিয়ে নতুন গল্প সাজাচ্ছে।’
তিনি জানান, ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে বিএনপি। তবে এবার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি স্থগিত রাখা হচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা আরও দাবি করেন, ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এবং পরবর্তী আট দিনে ১৩২টি মামলায় তাদের পাঁচ হাজার ৫৫৯ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।