আমেরিকার হামলার নিন্দা: দায়িত্বহীন এবং ইরাকের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন
বিশ্ব ডেস্ক: ইরাকের অভ্যন্তরে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের ওপর আমেরিকার বিমান হামলাকে ‘দায়িত্বহীন’ উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
বিবিসি জানায়, ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইয়াহিয়া রসুল স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ জানুয়ারি) আমেরিকান হামলাকে স্পষ্টভাবে তার দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
এ সময় নিজ ভূমিতে ইরাকের জনগণের বিরুদ্ধে আমেরিকান এ অভিযানকে ‘আগ্রাসনমূলক কাজ’ উল্লেখ করে দেশটির শান্তি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে ওই বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে এ অঞ্চল ইতোমধ্যে সংঘাতময় হয়ে ওঠেছে, এমন সময় আমেরিকার এ হামলা বছরের পর বছর করা সহযোগিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
ইরাকের বেশ কয়েকটি স্থানে গত মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) মধ্যরাতে আমেরিকান বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটি এ বিবৃতি দিল।
এদেকে আমেরিকা বলছে যে, শুধুমাত্র ইরাকে অবস্থানরত ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে।
হামলার স্থানগুলোর নাম উল্লেখ না করে আমেরিকান সেন্ট্রাল কমান্ড বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানায়, ইরাকের অভ্যন্তরে মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে কাতাইব হিজবুল্লাহ মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সদর দফতর, স্টোরেজ এবং রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র ও একমুখী ইউএবি হামলা চালানোর প্রশিক্ষণের স্থানগুলোকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আমেরিকান ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন বলেন, ‘কাতাইব হিজবুল্লাহ মিলিশিয়া ও অন্য আরেকটি গোষ্ঠীর তিনটি স্থাপনায় হামলা ইরাক ও সিরিয়ায় আমেরিকা এবং আন্তর্জাতিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মিলিশিয়াদের ক্রমবর্ধমান সিরিজ আক্রমণের সরাসরি জবাব।’
ইরাকি পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ) নামে আধাসামরিক গোষ্ঠীটি আমেরিকান হামলায় তাদের একজন যোদ্ধা নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কাসেম আল-আরাজি এক্সে-এ লেখেন, ‘আমেরিকার এ পদক্ষেপ ইরাকে শান্তিতে আনতে সাহায্য করবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইরাকের জাতীয় সংস্থার ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু ও বোমা হামলার পরিবর্তে গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণ বন্ধের জন্য আমেরিকার চাপ তৈরি করা উচিত।’
অস্টিন লয়েড অবশ্য বলেছেন, ‘আমরা এ অঞ্চলে সংঘাত বাড়াতে চাই না। আমাদের জনগণ এবং সুযোগ-সুবিধা রক্ষার জন্য আমরা আরও ব্যবস্থা নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত।
‘আমরা এ গোষ্ঠীগুলো এবং তাদের ইরানি পৃষ্ঠপোষকদের অবিলম্বে আমাদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানাই।’
কাতাইব হিজবুল্লাহ ও পিএমএফ দুটি শক্তিশালী ইরাকি শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী যারা ইরান থেকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা পায়।