নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারকে হয়রানি বলছে বিএনপি
টুইট ডেস্ক : গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশে সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮৯টি মামলায় বিএনপির ২ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। এর মধ্যে আছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা।
বিএনপির দাবি, নেতাকর্মীদের হয়রানি করতেই এ ধরপাকড়। অবশ্য বিএনপি নেতাদের এ অভিযোগ অস্বীকার করে আইনমন্ত্রী বলছেন, রাজনৈতিক কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
গত ২৮ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ও সরকারে পদত্যাগের একদফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতাকর্মীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা চালায়। ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালেও।
বিএনপিকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হন প্রায় অর্ধশত। এ সময় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর ওপরও হামলা করা হয়। ভাংচুর করা হয় গণমাধ্যমের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল।
ওই দিন সন্ধ্যায় রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। হরতালের মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। তাদের কর্মসূচির সাথে মিল রেখে জামায়াতে ইসলামীও তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
তাদের এ অবরোধের শেষদিন গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নতুন করে রোববার ও সোমবার অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। প্রতিবারের মতো এবারও এই অবরোধে নিজেদের সমর্থন জানিয়ে একই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় জামায়াতে ইসলামী।
দ্বিতীয় দফা অবরোধের শুরুতেই গত শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানীতে ৪টি সহ সারা দেশে মোট ৬টি যানবাহনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বিএনপি-জামায়াতের প্রথম দফা অবরোধের সময়েও ৩ দিনে রাজধানীতে ১২টি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছিল।
এসব ঘটনায় উসকানি, নাশকতা ও আগুন দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ শীর্ষস্থানীয় বেশ কজন নেতাকে। সবশেষ রোববার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হয়রানি করতেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘এভাবে যদি রাজনীতিবীদদের হয়রানি করা হয়, তাহলে এটা পরিষ্কার মাথায় রাখবেন, যারা আজ রাজনীতিবীদদের আটক করে অপমান করেছে, আগামী দিন তাদের অপমান আগামী কালকের জন্য অপেক্ষা করছে।’
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশে নয়, অপরাধে জড়িত থাকার কারণেই বিএনপি নেতাদের আটক করা হয়েছে। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
আনিসুল হক বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে ধরা হয়নি। ওনাদের অপরাধজনিত সংশ্লিষ্টতায় ধরা হয়েছে। রাজনীতির সাথে এটার কোনো কানেকশন নেই।’
সরকারের পক্ষ থেকে এর আগেই হুঁশিয়ার করা হয়েছে, আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের সহিংসতা করলে ছাড় দেওয়া হবে না।