প্রকল্প ঋণে লিড ব্যাংকে আয় হিসাব খুলতে হবে: বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলারের মাধ্যমে জানিয়েছে, প্রকল্পের আয়ের হিসাব ঋণদাতা ব্যাংকেই খুলতে হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, তফসিলি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা প্রকল্প ঋণের যথাযথ তদারকি বাড়াতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। লিড ব্যাংকের কাছে একাধিক ব্যাংক থেকে প্রদত্ত ঋণের ক্ষেত্রেও এই বিধান প্রযোজ্য।

প্রকল্পের আয় ঋণের বিপরীতে প্রদেয় কিস্তির চেয়ে বেশি হলে-ওই আয়ের অতিরিক্ত অংশ জমা গ্রহণের জন্য ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক বা লিড ব্যাংকের অনাপত্তি গ্রহণ সাপেক্ষে অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের নামে আয় হিসাব খোলা যাবে বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কিছু ঋণগ্রহীতা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রকল্প ঋণ গ্রহণ করছেন। তবে প্রকল্পের আয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা করছেন না ঋণগ্রহীতা । ফলে ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকের ঋণ আদায়ে ঝুঁকি বাড়ছে। এজন্য ঋণ নেওয়া ব্যাংকেই প্রকল্প আয়ের হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ একটি সার্কুলার জারি করেছে। এটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

একটি প্রকল্পে একাধিক ব্যাংক থেকে প্রদত্ত প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে লিড ব্যাংকে আয় হিসাব খুলতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বে-সরকারি ব্যাংক এমটিবি’র একজন ক্রেডিট মনিটরিং অফিসার (সিএমএএম) বলেন, ব্যাংকগুলো আগে থেকেই কিছুটা এই নিয়ম পালন করে আসছে, তবে প্রকল্প কর্মকর্তারা এটার তোয়াক্কা করতেন না। ফলে ঋণগ্রহীতারা সেই সুযোগটি গ্রহন করতেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বর্তমানে যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটা সময় উপযোগী ও বাস্তব সম্মত। এটা একটা ভাল উদ্দ্যোগ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগ বড় ঋণগ্রহীতা প্রকল্পের বিপরীতে ঋণ নিয়েছেন। বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পের বিপরীতে ঋণ নেওয়ার পর তাঁদের অনেকে শত কোটি টাকা খেলাপি হন, এতে ব্যাংকের আয় বাড়ার বদলে মন্দ ঋণই বেড়ে যায়।”

অপরদিকে অনেক সময় ভালো প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার পরেও ঋণগ্রহীতা অন্য ব্যাংকে প্রকল্পের আয় হিসাব খোলেন ঋণগ্রহীতা, এতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ওই আয় পায় না। ফলে প্রকল্পটি কতো আয় করছে সে সম্পর্কেও ঋণদাতা ব্যাংক জানতে পারে না।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ব্যাংকের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এতে আয় হিসাব থেকে ঋণের কিস্তি সমন্বয় সহজেই করা যাবে।

বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিবিএসকে বলেন, “প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে, ঋণদাতা ব্যাংকেই আয় হিসাব খোলার নিয়ম। তবে কিছু ঋণগ্রহীতা ক্ষমতা ও প্রভাবের অপব্যবহার করে অন্য ব্যাংকে আয় জমা করেন। এতে ঋণ আদায় প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।”

তিনি আরও বলেন, ঋণগ্রহীতা যে এলাকায় তাঁর প্রকল্পটি করেছেন, সেখানে ঋণদাতা ব্যাংকের কোনো শাখা না থাকলেও এমনটি ঘটে থাকে। একারণে কেউ কেউ অন্য ব্যাংকে আয় জমা করেন। তবে বর্তমানে ইন্টারন্যাট ব্যাংকিং ও মুঠোফোনে আর্থিক সেবার সুবিধা থাকায় এমনটা করার আর কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।