দেশে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, দ্রুত টিকা দেওয়ার নির্দেশ
টুইট ডেস্ক: বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশে দ্রুত করোনার টিকা দেওয়া শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর । বাংলাদেশ সরকার নিয়ে আসছে নতুন একটি কার্যক্রম, যার মাধ্যমে প্রথম, দ্বিতীয় এবং বুস্টার (তৃতীয় এবং চতুর্থ) ডোজের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হবে।
এ তথ্যটি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব ডক্টর মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের নতুন উপধরন জেএন.১-এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানান, পাঁচজন কোভিড রোগীর নমুনা পরীক্ষার পর নতুন এ উপধরন ধরা পড়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত ওই পাঁচজন রোগী ঢাকা ও ঢাকার বাইরের।
প্রথমত, টিকা প্রদানের লক্ষ্যে রাখা হয়েছে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬০ বছর ও এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত বা স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ১৮ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ১ম, ২য় এবং বুস্টার ডোজ (৩য়, ৪র্থ ডোজ) বিতরণ এবং প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ভ্যাকসিন প্রদানের ক্ষেত্রে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬০ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব) জনগোষ্ঠী ও গর্ভবতী নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা শহরের ৮টি কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ অর্থাৎ ৩য় এবং ৪র্থ ডোজ ফাইজার ভিসিভি ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। কেন্দ্রগুলো হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল।
পরে ধাপে ধাপে ঢাকার বিভিন্ন বিশেষায়িত ইন্সটিটিউট ও সরকারি হাসপাতাল, ঢাকার বাইরের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালসমূহে ভ্যাকসিন বিতরণের মাধ্যমে কোডিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ১ম এবং ২য় ডোজের ক্ষেত্রে ফাইজার আরটিইউ ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হবে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল, মহাখালী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নয়াবাজার ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে এই টিকা প্রদান করা হবে।
ফাইজার ভিসিভি এবং আরটিইউ টিকার ডোজের পরিমাণ- ০.৩ এম এল (০৬ ডোজের ভায়াল) টিকা প্রদানের জন্য ব্যবহৃত সিরিঞ্জ: ০.৩ এম এল প্রয়োগপথ: ডান বা বাম বাহুর উপরিভাগের ডেল্টয়েড মাংসপেশির মধ্যভাগে ৯০ ডিগ্রি কোণে পরিবহনের তাপমাত্রা: +২০ থেকে ৮০ সেলসিয়াস সংরক্ষণ: গলানোর তারিখ থেকে ৭০ দিন পর্যন্ত ২০ থেকে ৮০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ এবং ব্যবহার করা যাবে।
গলানো ভ্যাকসিন কোনভাবেই পুনরায় জমানো যাবে না। ভায়াল খোলার ০৬ ঘণ্টার মধ্যে ভ্যাকসিন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। টিকা পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়ার (এইএফআই) ক্ষেত্রে পূর্বে সরবরাহকৃত এইএফআই গাইডলাইনের নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
১ম এবং ২য় ডোজ টিকা পাবার প্রমাণস্বরূপ ভ্যাকসিনের নাম এবং তারিখ উল্লেখপূর্বক কোভিড-১৯ টিকাদান কার্ড সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রদান করা হবে।
৩য় এবং ৪র্থ ডোজ টিকার ক্ষেত্রে সুরক্ষা ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপ থেকে টিকাকার্ড ডাউনলোড করে সাথে আনতে হবে; এমআইএস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পূর্ব নির্ধারিত উপায়ে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশনের রিপোর্ট প্রদান করতে হবে।