২৫ অক্টোবর থেকেই মাঠ নামবে আওয়ামী লীগ
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ঢাকা দখল করে নেবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ২৪ অক্টোবর শারদীয় দুর্গোৎসব এবং শারদীয়া দুর্গোৎসব যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় সেজন্য আওয়ামী লীগ সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছে, প্রশাসনকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে যেন কোন ধরনের নাশকতা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা করতে না পারে সেই জন্য আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
২৪ অক্টোবর শারদীয় দুর্গা উৎসব শেষ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে নামবেন। ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ টানা কর্মসূচি রাখছে ঢাকায়। এই সমস্ত কর্মসূচির মধ্যে থাকবে সমাবেশ, শান্তি মিছিল সহ বিভিন্ন জনসংযোগ মূলক কর্মসূচি। এর মাধ্যমে মাঠের দখল আওয়ামী লীগ রাখতে চায়।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আওয়ামী লীগ কর্মসূচির মধ্যে আছে এবং কর্মসূচির মধ্যে থাকবে। ঢাকা শহর অবরোধ করা বা ঢাকার রাজপথ দখল করার মতো কোনো ধৃষ্টতা যদি বিএনপি দেখানোর করে তাহলে তাদের সেই দুরভিসন্ধি প্রতিহত করা হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, শুধু মূল সংগঠন নয়, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ সহ সবগুলো অঙ্গ সংগঠনকেই ২৫ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকতে বলা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর যেদিন বিএনপি মহাসমাবেশ ডাকবে সেদিনও আওয়ামী লীগ একটি মহাসমাবেশ ডাকার পরিকল্পনা নিয়েছে।
আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, রাজপথে যদি আওয়ামী লীগের উপস্থিতি থাকে সেক্ষেত্রে বিএনপি রাজপথ দখল করতে পারবে না এবং বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটাতে পারবে না। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে শুধু ঢাকায় নয়, সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মীদেরকেও আগামী কয়েকদিন সতর্ক পাহারায় থাকার জন্য বলা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে বিভিন্ন রকম কর্মসূচি দিয়ে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছেন। সমস্ত সংসদ সদস্যদেরকে এই বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে। এই বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও, নাশকতা প্রতিহতের জন্য এমপিদেরকে তাদের নিজ নিজ এলাকায় কর্মসূচি গ্রহণ এবং জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেবেন।
আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। এই তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত কোনো রকম রাজনৈতিক অস্থির অস্থিরতা যেন তৈরি না হয় সেজন্যই সতর্ক অবস্থাতে থাকবে আওয়ামী লীগ।
তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, তারা সতর্কতা অবস্থায় থাকলেও সহিংসতা বা রাজনৈতিক গোলযোগ যেন না হয় সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকবে। কারণ বিএনপি চাইবে যে, বর্তমান পরিস্থিতিকে উস্কে দিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে গোলযোগ বাঁধিয়ে সহিংসতা করে একটি পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেবো। কিন্তু রাজনীতিতে কোনো উস্কানি বা প্রলোভনের দ্বারা প্ররোচিত হবো না। তিনি মনে করেন যে, বিএনপির সহিংসতার একটি পটভূমি তৈরি করতে চায়। এটি বানচাল করে দিতে হবে। আর তাই রাজনীতিতে আগামী কয়টা দিন যে টানটান উত্তেজনা থাকবে এটা বলাই বাহুল্য।