আমেরিকার হামলার ‘শক্ত ও উপযুক্ত’ জবাব দেয়া হবে: হুথির হুমকি
বিশ্ব ডেস্ক: আমেরিকা ইয়েমেনে হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর পর ‘শক্ত ও উপযুক্ত’ জবাব দেয়ার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি। ওয়াশিংটন হুথিদের হামলা থেকে ‘রেড সি’তে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দেয়ার ফলে ওই অঞ্চলে ইরান সমর্থিত এ গোষ্ঠীর সঙ্গে আমেরিকার সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
আমেরিকার নতুন এই হামলার ফলে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান এই সংঘর্ষ নতুন করে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংঘর্ষে লেবানন, সিরিয়া ও ইরাক থেকে ইরানের মিত্র গোষ্ঠীগুলোও যোগ দিয়েছে।
‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছে, হুথিদের হামলার বিষয়ে ইরানকে একটি গোপন বার্তা পাঠানো হয়েছে।’ বিস্তারিত উল্লেখ না করে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা গোপন বার্তাটি পাঠিয়েছি এবং আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতির বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
ইয়েমেনে হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর একদিন পরই আমেরিকা হুথিদের একটি রাডার ব্যবস্থার স্থাপনায় নতুন এই হামলার কথা জানিয়েছে।
নতুন হামলায় কোনো হতাহত বা বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে হুথিদের মুখপাত্র নাসরুলদীন আমের আল জাজিরাকে বলেন, “এই নতুন হামলার একটি দৃঢ়, শক্তিশালী ও কার্যকর জবাব দেয়া হবে।”
হুথিদের আরেকজন মুখপাত্র মোহাম্মেদ আবদুসালাম রয়টার্সকে বলেছেন, আমেরিকার হামলাগুলোতে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোর ‘রেড সি’ ও ‘অ্যারাবিয়ান সি’তে চলাচলে বাধা দিতে গোষ্ঠীটির সক্ষমতায় কোনো প্রভাব পড়েনি।
পেন্টাগন শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) জানায়, আমেরিকা ও বৃটেইনের করা যৌথ হামলার ভালো প্রভাব পড়েছে।
ইয়েমেনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হানস গ্রান্ডবার্গ শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চিত পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করেছেন।
হুথি জানিয়েছে, তারা ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্যালেস্টেনিয়ানদেরকে সমর্থনের জন্য সমুদ্রে অভিযান চালাচ্ছে। তবে তাদের হামলা করা অনেক জাহাজের সঙ্গে ইসরায়েলের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ নেই।
ইয়েমেনের পশ্চিম ও উত্তর অংশের বেশিরভাগ ও সানা নিয়ন্ত্রণকারী হুথিরা ‘রেড সি’ ও ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
‘ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড এক্স এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজগুলোতে হুথিদের হামলার সক্ষমতা ব্যাহত করতে আমেরিকার ডেস্ট্রয়ার কার্নি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।’
আমেরিকার নেতৃত্বাধীন হামলাগুলোকে ‘নিষ্ঠুর আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করে ইয়েমেনের সানার এক সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মেদ সামেই বলেছেন, এই হামলাগুলোর ফলে ইয়েমেনে ১০ বছর ধরে চলে আসা যুদ্ধটির নতুন ধাপের সূচনা হয়েছে।
প্যালেস্টেনিয়ানদেরকে সমর্থন করাকে ‘ধর্মীয় ও নৈতিক কর্তব্য’ বলে অভিহিত করেছেন হুসেইন কাবসি নামক ইয়েমেনের একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা।
হুথি নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরাহ টিভি এর প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার সানায় হাজার হাজার মানুষ একটি মিছিলে অংশগ্রহন করেছে ও ইসরায়েল ও আমেরিকার নিন্দা করে স্লোগান দিচ্ছে।
এই হামলার বিষয়ে জাতিসংঘে রাশিয়ার অ্যাম্বাসেডর ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া শুক্রবার সিকিউরিটি কাউন্সিলে বলেছেন, আমেরিকা ও বৃটেইন এককভাবে সমগ্র অঞ্চলে সংঘাতের সূচনা করেছে।