রাজশাহীতে আবারও জোর করে পুকুর খনন, ৪ এক্সকাভেটরে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে ফসলি জমিতে জোর করে পুকুর খননকে কেন্দ্র করে আবারও সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এবার গভীর রাতে দুর্গাপুর উপজেলায় পুকুর খননের অভিযোগে চারটি এক্সকাভেটের আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন গ্রামের লোকজন। গত সোমবার রাতে উপজেলার কিসমত গণকৈড় ইউনিয়নের উজানখলসী বিলে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, জোর করে পুকুর খননের বিষয়ে তাঁরা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি অভিযানও চালিয়েছিলেন। তারপরও গভীর রাতে পুকুর খনন করা হচ্ছিল।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর মোহনপুর উপজেলার বড় পালশা গ্রামে ফসলি জমিতে পুকুর কাটতে বাধা দেওয়ায় এক তরুণকে এক্সকাভেটরের চাকার নিচে ফেলে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। গ্রামের লোকজন চালককে আটক করে এক্সকাভেটরে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় নিহত তরুণের বাবা সাতজনকে আসামি করে মোহনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ চালক ছাড়া আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

উজানখলসী বিলের ভুক্তভোগী কৃষকেরা দুই দিন আগে দুর্গাপুরের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে জোর করে পুকুর খননের বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন। পরে সেখানে তিনি অভিযান চালান।

কৃষকেরা অভিযোগ করেন, সহকারী কমিশনারের অভিযান ছিল লোকদেখানো। দায় এড়াতে তিনি এসেছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও পুকুর খননের কাজ শুরু হয়। ওই অভিযানের পর দিন সোমবার একযোগে নতুন করে আরও তিনটি এক্সকাভেটর দিয়ে খনন শুরু হয়।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, পুকুর খননকারীরা পার্শ্ববর্তী উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা। তারা খুবই প্রভাবশালী। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পুকুর খনন বন্ধ না হওয়ায় স্থানীয় লোকজন একজোট হয়ে গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন।

উজানখলসী বিলে গিয়ে দেখা যায়, পুকুর খননের কাজ বন্ধ। ৫টি গাড়ি থাকলেও আগুন দেওয়া হয়েছে চারটিতে। স্থানীয় কয়েকজন জানান, সোমবার মধ্য রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গাড়িতে আগুন জ্বলছিল। প্রায় ৫০ বিঘা জমি ঘিরে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন তাহেরপুর পৌরসভা এলাকার বেলাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্গাপুর উপজেলার ঝিনাইয়ের মোড়, কয়ামাজমপুর, সুখানদিঘি, উজানখলসী, মাড়িয়াসহ কয়েক জায়গায় পুকুর খননকাজ শুরু হয়েছে। সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অভিযানের পর পুকুর খননকাজ সাময়িক বন্ধ থাকে। তবে আবার নতুন করে খননকাজ চলে।