যাত্রা শুরু করলো ভোটের গাড়ি ‘সুপার ক্যারাভান’

‘সুপার ক্যারাভান’ ৬৪ জেলা ও ৩০০ উপজেলায় ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের বার্তা পৌঁছে দেবে ভোটের গাড়ি!
টুইট ডেস্ক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত গণভোটকে সামনে রেখে সারাদেশে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে ‘ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান’।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির সূচনা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে সুপার ক্যারাভানের যাত্রা উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ওপর গণভোট—এই দুটি বিষয় দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, এই লক্ষ্য সামনে রেখেই ১০টি ভোটের গাড়ি নিয়ে ‘সুপার ক্যারাভান’ যাত্রা শুরু করেছে। এসব গাড়ি দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে তারা নির্বাচন ও গণভোট সংক্রান্ত তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রের গুরুত্ব তুলে ধরবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ভোটাধিকার কারো দয়া নয়—এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা নির্ধারণ করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এটি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।”
তিনি আরও বলেন, “সুপার ক্যারাভান কেবল কয়েকটি গাড়ির বহর নয়—এটি গণতন্ত্রের বার্তা বহনকারী এক আনন্দযাত্রা। এটি মানুষকে জানাবে, একটি ভোট কতটা মূল্যবান। এটি মনে করিয়ে দেবে—নিষ্ক্রিয়তা নয়, অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।”
তরুণ সমাজ, নারী ভোটার ও প্রথমবারের ভোটারদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন, “আপনারা এগিয়ে আসুন। প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। আপনাদের সিদ্ধান্তেই গড়ে উঠবে আগামী দিনের বাংলাদেশ—নতুন বাংলাদেশ।”
প্রধান উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়ে বলেন, সরকার এমন একটি নির্বাচন চায় যেখানে থাকবে না ভয়, থাকবে না বাধা—থাকবে কেবল জনগণের মুক্ত ও নির্ভীক মতপ্রকাশ। সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, “আপনিই দেশের মালিক। আগামী পাঁচ বছর দেশ কে পরিচালনা করবে, তা আপনিই ঠিক করবেন। সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বেছে নিয়ে চিন্তাভাবনা করে ভোট দিন।”
জুলাই জাতীয় সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এবারের নির্বাচনে আপনারা আরও একটি ভোট দেবেন—জুলাই সনদের পক্ষে বা বিপক্ষে। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে এই সনদ তৈরি হয়েছে। দেশের মানুষ যদি এটি সমর্থন করে, তবে বাংলাদেশ বহু বছরের জন্য নিরাপদ ও স্থিতিশীল পথে চলবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আপনি যদি এই সনদ সমর্থন করেন, তবে গণভোটে অবশ্যই ‘হ্যাঁ’ ভোট দিন।”
শেষে তিনি বলেন, “চলুন, আমরা সবাই মিলে এই গণতান্ত্রিক যাত্রাকে সফল করি। চলুন, ভোট দিই—নিজের জন্য, দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এবং একটি নতুন বাংলাদেশের জন্য।”






