রাজশাহীর বাগমারায় মৎস্য চাষীদের বিরুদ্ধে বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগ

নরদাশ ইউনিয়নের সাইধাড়া গ্রামে লিজের টাকা দাবি নিয়ে মৎস্য চাষী ও বহিরাগতদের হামলায় বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা; পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারায় রাতের অন্ধকারে বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে একদল মৎস্য চাষীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের সাইধাড়া গ্রামে।

ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, নরদাশ ইউনিয়নের যশোর বিল এলাকার জমি লিজ নিয়ে আবু জাফর নামে এক মৎস্য চাষী দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছিলেন। তবে ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি ও জামায়াতপন্থী কয়েকজন ব্যক্তি বিলটির দখল নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় তারা জমির মালিকদের লিজের টাকা পরিশোধ না করেই মাছ ধরার চেষ্টা চালাতে থাকেন।

জমির লিজের টাকা দাবি করাকে কেন্দ্র করে রোববার রাত নয়টার দিকে মৎস্য চাষীরা ভাড়াটে লোকজন নিয়ে জমির মালিকদের বাড়িঘরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। হামলার সময় ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিলের জমির মালিক সাইধাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুশীল চন্দ্র দেবনাথ, আব্দুল জব্বার ও আব্দুল মান্নান অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের যশোর বিলে জমি রয়েছে। কিন্তু বিল কমিটির লোকজন লিজের টাকা না দিয়ে নানা অজুহাতে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। টাকা চাইলে তারা পরিকল্পিতভাবে বহিরাগত ও স্থানীয় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী দিয়ে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালায়।”

ভুক্তভোগীরা জানান, হামলায় বৈদ্যুতিক মিটার, বিশুদ্ধ পানির মোটর, আলুক্ষেত, দরজা-জানালা, বসতবাড়ির প্রাচীর ও টিনের চালা ভাঙচুর করা হয়। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন এবং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান বাচ্চুর ইন্ধনে এ হামলা সংঘটিত হয়। এতে একই গ্রামের বহিষ্কৃত জামায়াত নেতা সেফাতুল্লার ছেলে আজিজুর রহমান, সোলাইমানের ছেলে আব্দুল জব্বারসহ ২৫–৩০ জন বহিরাগত অংশ নেয়।

তবে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৎস্য চাষী ও সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। তিনি অসুস্থ রয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।