টেকনাফের পাহাড়ে বিজিবির অভিযানে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

সশস্ত্র ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলি, আস্তানা ফেলে পালাল অপরাধীরা।

টুইট ডেস্ক: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রাঙ্গিখালী এলাকার গহীন পাহাড়ে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

অভিযানের সময় সশস্ত্র ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা তাদের অস্থায়ী আস্তানা ফেলে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে পালিয়ে যায়।

উখিয়া ব্যাটালিয়ন (৬৪ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে অভিযান শুরু হয়। রাত আনুমানিক ১০টা ৫০ মিনিটে রাঙ্গিখালী পাহাড়ের একটি স্থানে ডাকাত দলের অস্থায়ী ঘাঁটি ঘিরে ফেলে বিজিবি। এ সময় ডাকাতরা বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি করলে একপর্যায়ে ডাকাত দল এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

ডাকাতদের পরিত্যক্ত আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে বিজিবি বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করে। এর মধ্যে রয়েছে জি-৩ রাইফেল ও এর অংশবিশেষ, একাধিক ওয়ান শুটার গান, এলজি শুটার গান, এমএ-১ (এমকে-২ ভ্যারিয়েন্ট), একনলা গাদা বন্দুক, হ্যান্ড গ্রেনেড, মর্টার শেল, সিলিং ডেটোনেটর, বিপুল পরিমাণ গানপাউডার ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ ও ব্যবহৃত খালি খোসাও উদ্ধার করা হয়।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ টেকনাফ মডেল থানায় জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, হ্নীলা ইউনিয়নের রাঙ্গিখালী পাহাড় এবং বাহারছড়া ইউনিয়নের মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র ডাকাত ও চোরাচালানকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। এসব দল অপহরণ, গুম, খুন, মানব পাচারসহ নানা গুরুতর অপরাধে জড়িত এবং সীমান্তবর্তী হওয়ায় মাদক ও অস্ত্র পাচারের সঙ্গেও সম্পৃক্ত।

বিজিবি কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধারকৃত অস্ত্রের বড় একটি অংশের উৎস মিয়ানমার সীমান্ত। দেশটিতে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র প্রবাহ বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল জসীম উদ্দিন বলেন, সীমান্ত এলাকায় অপরাধ দমনে এ ধরনের বিশেষ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, চলতি বছরের মার্চ থেকে উখিয়া ব্যাটালিয়ন প্রায় ১১৯ কোটি টাকার মাদক উদ্ধারসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

এই অভিযানের ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা ও স্বস্তির অনুভূতি ফিরেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।