সহিংসতা রুখতে নাগরিকদের ঐক্যের আহ্বান অন্তর্বর্তী সরকারের

মব সহিংসতা ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা, শহীদ হাদির স্মরণে সংযমের ডাক।

স্টাফ রিপোর্টার: দেশজুড়ে সাম্প্রতিক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার সকল নাগরিককে মব সহিংসতা ও উসকানির বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সরকার জানায়, বিচ্ছিন্ন কিছু উগ্র গোষ্ঠীর সহিংস তৎপরতায় দেশের শান্তি ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত হতে দেওয়া হবে না।

বিবৃতিতে বলা হয়, সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং জানমাল ধ্বংসের যেকোনো ঘটনা সরকার দৃঢ়ভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানায়। দেশের ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে শান্তিকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের হাতে এই অগ্রযাত্রা কোনোভাবেই জিম্মি হতে পারে না।

সরকার আরও জানায়, আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট কেবল রাজনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা নয়; এগুলো জাতির প্রতি একটি গুরুতর ও পবিত্র অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত সেই স্বপ্নের সঙ্গে, যার জন্য শহীদ শরীফ ওসমান হাদি জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর আত্মত্যাগ ও স্মৃতির প্রতি প্রকৃত সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীল আচরণ এবং ঘৃণা ও সহিংসতা প্রত্যাখ্যানের প্রতি অবিচল থাকতে হবে।

সাংবাদিকদের পাশে সরকারের দৃঢ় অবস্থান

বিবৃতিতে দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো ও নিউ এজ–এর সাংবাদিকদের উদ্দেশে সরকার জানায়, “আমরা আপনাদের পাশে আছি।” সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমকর্মীরা যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, সে জন্য সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করে। বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসের মুখেও সাংবাদিকদের সাহস ও সহনশীলতা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানেই সত্যের ওপর হামলা—এ কথা উল্লেখ করে সরকার পূর্ণ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।

ময়মনসিংহে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা

ময়মনসিংহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলে, নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

নাগরিকদের প্রতি আহ্বান

বিবৃতির শেষাংশে সরকার দেশের সকল নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানায়—এই সংকটময় মুহূর্তে সহিংসতা, উসকানি ও ঘৃণাকে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধের মাধ্যমে শহীদ শরীফ ওসমান হাদির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।

শান্তি, সহনশীলতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পথেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ।