প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ব্লিনকেন

প্যালেস্টেনিয়ান অথরিটির প্রধান মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেইট। ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব ডেস্ক: আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেইট অ্যান্টোনি ব্লিনকেন বুধবার (১০ জানুয়ারি) ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর সফরের সময় প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র তৈরির প্রতি ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তার সফরকে সেখানকার অনেক বাসিন্দাই “অভিনয়” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

একজন মুখপাত্র জানিয়েছে, প্যালেস্টেনিয়ান প্রেসিডেন্ট ও প্যালেস্টেনিয়ান অথরিটির (পিএ) প্রধান মাহমুদ আব্বাসকে ব্লিনকেন বলেছে, আমেরিকার অবস্থান হলো ইসরায়েলের সঙ্গে একটি প্যালেস্টেনিয়ান রাষ্ট্রও অস্তিত্বশীল হবে ও উভয়েই শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে সহাবস্থান করবে।

‘ব্লিনকেন কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রামাল্লায় আব্বাসের প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছান।’ সেখানে একদল লোক বিক্ষোভ করছিলেন ও তাদের হাতে “গণহত্যা বন্ধ কর’, ‘প্যালেস্টাইন মুক্ত কর’ ও ‘ব্লিনকেন চলে যাও” লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল।

বিশ্লেষক ও রামাল্লার অন্যান্য বাসিন্দারা বলেছেন, ‘ব্লিনকেনের এই সফর নিয়ে প্যালেস্টেনিয়ানদের প্রত্যাশা ধারণার চেয়েও কম ছিল।’

ব্লিনকেনের এই সফরের বিষয়ে আতেফ আল হামুদ নামে একজন স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘এই সফরের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো গাজা ধ্বংস করার জন্য ইসরায়েলকে আরও সময় দেয়া।’

জামাল জাকুত নামে একজন বিশ্লেষক বলেন, ‘এই যুদ্ধ শুধু প্যালেস্টাইন নয়, সব আরব রাষ্ট্রেই আমেরিকার ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কেউই তাদের অন্যায় আচরণকে এড়িয়ে যেতে পারবে না।’ ‘গত তিন মাস ধরে আমেরিকা যা করেছে তা হলো ইসরায়েলকে রক্ষা করা।’

‘ব্লিনকেন মঙ্গলবার শীর্ষ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের প্রতি বেসামরিকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা, গাজায় আরও সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেয়া ও বাসিন্দাদেরকে তাদের ঘরে ফেরার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানান।’

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মঙ্গলবার কঠিন আলোচনার ইঙ্গিত দিয়ে ব্লিনকেন বলেছেন, ‘অ্যামেরিকার কর্তব্য হলো মিত্রদের সঙ্গে যতোটা সম্ভব স্পষ্টবাদী হওয়া। তিনি বলেছেন যে,আমেরিকা ইসরায়েলকে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।’

আমেরিকা গত ৩ মাস ধরে হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর থেকেই ইসরায়েলের প্রতি জোরাল সমর্থন ব্যক্ত করে আসছে। কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তী গাজায় সরকার ব্যবস্থা কী ধরণের হবে তা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অস্বীকৃতি জানানোর ঘটনা ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে তোলে।

ইসরায়েল এখন পর্যন্ত যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পিএর গাজা ও পশ্চিম তীর শাসন করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে। এর পরিবর্তে তারা ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেসের তত্ত্বাবধানে কোনো স্থানীয় গোষ্ঠীর হাতে গাজার শাসনভার দেয়ার কথা প্রস্তাব করেছে।

ব্লিনকেন মঙ্গলবার আশা প্রকাশ করেছে যে, ইউনাইটেড আরব আমিরাত, বাহরাইন ও অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েল আমেরিকার মধ্যস্থতায় সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি অনুসরণ করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।