বান্দরবানে উৎসবমুখর মহান বিজয় দিবস উদযাপন

বিজয় মেলা, মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন

অসীম রায় (অশ্বিনী), বান্দরবান: নানামুখী আয়োজন ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বান্দরবানে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক জাগরণ ও মানবিক বোধ জাগ্রত করার লক্ষ্যে ২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের মিলনানুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী বিজয় মেলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনাসহ বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করা হয়।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে সকল বীর শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, জেলা প্রশাসন ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পুলিশ।

১৯৭১ সালের দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। এই দিনে ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে জাতি অর্জন করে স্বাধীনতার পূর্ণতা। বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে নেয় লাল-সবুজের পতাকা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে পুলিশ সুপার আবদুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী জাতির বীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। যে সকল বীর সন্তানের আত্মত্যাগে এই পতাকা ও মানচিত্র এসেছে, তাদের ঋণ কখনো শোধ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, রাজারবাগে পুলিশের সদস্যরাই প্রথম থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পুলিশের বেতার বার্তার মাধ্যমে সারাদেশে প্রতিরোধ যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার প্রশাসক এস এম মঞ্জুরুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবু তালেব, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মীরা, জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, আনসার বাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রঙিন পোশাকে অংশ নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাদের কণ্ঠে ও উপস্থিতিতে প্রতিফলিত হয়—“আমি স্বাধীন বাংলাদেশের সন্তান”।