রাজনৈতিক ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ও প্রার্থীদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও গানম্যানের সুযোগ

টুইট নিউজ ডেস্ক : রাজনৈতিকভাবে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যক্তি এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার পাশাপাশি রিটেইনার (গানম্যান) নিয়োগের সুযোগ দিয়ে বিশেষ নীতিমালা জারি করেছে সরকার।
সোমবার (তারিখ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির ওপর হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জুলাইয়ের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ও নির্বাচনী প্রার্থীদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এই নীতিমালা জারি করা হলো।
কারা এই সুবিধা পাবেন
বিশেষ নীতিমালার আওতায় দুই শ্রেণির ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান নিয়োগের আবেদন করতে পারবেন—
১. সরকার স্বীকৃত বা অনুমোদিত রাজনৈতিকভাবে ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’
২. ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে তা বৈধভাবে গৃহীত প্রার্থীরা
লাইসেন্সের শর্ত
নীতিমালায় বলা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা প্রয়োজনে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাইকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকতে হবে। পাশাপাশি আবেদনকারীর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা এবং অস্ত্র সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
সাধারণ সময়ের অস্ত্র লাইসেন্স নীতিমালার শর্তগুলো এই বিশেষ ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। তবে সাধারণ নীতিমালায় পিস্তল, রিভলবার বা রাইফেলের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম ৫ লাখ টাকা আয়কর দেওয়ার যে শর্ত রয়েছে, এই বিশেষ ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না।
এই লাইসেন্সের আওতায় কেবল আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে সীমিত ক্যালিবারের আগ্নেয়াস্ত্র রাখা যাবে। একাধিক অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হবে না এবং স্বয়ংক্রিয় বা সামরিক অস্ত্রের লাইসেন্স অনুমোদিত হবে না।
লাইসেন্সের মেয়াদ
এই নীতিমালার আওতায় ইস্যুকৃত লাইসেন্সের মেয়াদ থাকবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর আরও ১৫ দিন পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হলে লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে। তবে শর্ত পূরণ সাপেক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে এ সাময়িক লাইসেন্সকে সাধারণ লাইসেন্সে রূপান্তর করতে পারবে। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বা বাতিলের পরও কেউ আগ্নেয়াস্ত্র রাখলে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গানম্যান (রিটেইনার) নিয়োগের বিধান
নীতিমালায় রিটেইনার বা গানম্যান নিয়োগের ক্ষেত্রেও শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা প্রার্থী লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য হলেও যদি নিজে অস্ত্র কিনতে অনিচ্ছুক বা অসমর্থ হন, তবে বৈধ লাইসেন্সধারী ও অস্ত্র পরিচালনায় সক্ষম একজন ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ রিটেইনার হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
রিটেইনারকে ন্যূনতম ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের রেকর্ড না থাকা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, সরকারি হাসপাতালের ফিটনেস সনদ এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সশস্ত্রবাহিনী বা বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন।
একজন রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা নির্বাচনী প্রার্থী সর্বোচ্চ একজন রিটেইনার নিয়োগ দিতে পারবেন। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলে রিটেইনারের অনুমতিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে।






