রাজশাহীতে বাজারে ধানের দাম নিম্নমুখী, হতাশ বরেন্দ্রের কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরেন্দ্র অঞ্চল : বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষ হলেও কৃষকের মুখে নেই হাসি। বাজারে ধানের দর একেবারেই নিম্নমুখী হওয়ায় হতাশায় পড়েছেন চাষিরা।
বর্তমানে বিভিন্ন হাটে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ধান বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়, যা গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ছিল প্রায় ১৪০০ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কৃষক প্রতি মণে প্রায় ২০০ টাকা কম পাচ্ছেন।
সরকার চলতি মৌসুমে প্রতি মণ আমন ধানের দাম ১৩৬০ টাকা নির্ধারণ করলেও এর কোনো প্রভাব বাজারে পড়ছে না বলে অভিযোগ কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম মণপ্রতি ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীরা জানান, মিলমালিকেরা ধান কিনছেন খুব ধীরগতিতে। ফলে আড়তদারদের কাছে ধান আটকে থাকছে এবং কৃষকের কাছ থেকে নতুন করে ধান কেনা সম্ভব হচ্ছে না। মিলমালিকদের একটি সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
কৃষকদের দাবি, চলতি মৌসুমে পোকার আক্রমণ ও অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, অথচ ফলন কম হয়েছে। এ বছর প্রতি বিঘায় গড়ে ফলন হয়েছে ১৪ থেকে ১৬ মণ, যেখানে গত বছর ছিল ১৮ থেকে ২০ মণ।
তানোর উপজেলার কৃষক সাহা আলম বলেন, “ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তো উঠছেই না, উল্টো মহাজনের দেনা শোধ করতে ঘর থেকে টাকা দিতে হচ্ছে।”
হাটগুলোতে নতুন ধানে ভরপুর থাকলেও ক্রেতা কম। অনেক আড়তে বস্তাভর্তি ধান পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মিলমালিক বলেন, আমনের ভরা মৌসুমে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি শুরু করায় ধানের দাম কমেছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, ডিসেম্বর মাসে সাধারণত ধানের দাম কিছুটা কম থাকে। কৃষকদের ধৈর্য ধরে ধান বিক্রির পরামর্শ দেন তিনি।






