পার্বত্য অঞ্চলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পাশে সেনাবাহিনী

পার্বত্য অঞ্চলে সম্প্রীতি ও মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
অসীম রায় (অশ্বিনী), বান্দরবান: পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আলীকদম জোন। দুর্গম পাহাড়ি জনপদে বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনী দিনব্যাপী একটি বিশেষ মানবিক সহায়তা ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
কিয়াং ঘর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা
দিনের শুরুতে সকালে আলীকদমে একটি নবনির্মিত বৌদ্ধ কিয়াং ঘর উদ্বোধনের মাধ্যমে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আলীকদম জোনের পক্ষ থেকে কিয়াং পরিচালনা কমিটির হাতে ২০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান তুলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এলাকার প্রবীণ নাগরিক ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মাইনপ্রুক জিংক্সে-কে বিশেষ উপহার সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় কিট প্রদান করা হয়।
দুর্গম এলাকায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
পার্বত্য এলাকার মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে আয়োজিত হয় একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। এতে পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠী মিলিয়ে মোট ২৯০ জন রোগী বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা পরামর্শ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি ক্যাম্পে ১ লাখ ৫৫ হাজার ২০০ টাকা সমমূল্যের প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এই উদ্যোগে স্থানীয় জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও সন্তোষের স্পষ্ট প্রতিফলন লক্ষ্য করা গেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলীকদম জোনের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ আশিকুর রহমান আশিক, এসপিপি, পিএসসি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপং মুরং, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
শান্তি ও উন্নয়নের অঙ্গীকার
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান আশিক বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিটি জনগোষ্ঠীর সুষম উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতায় একটি শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও স্বনির্ভর আলীকদম গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। আজকের এই আয়োজন আমাদের সেই অঙ্গীকারেরই বাস্তব প্রতিফলন।”
স্থানীয়দের প্রশংসা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই মানবিক ও জনবান্ধব উদ্যোগ স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ধরনের কার্যক্রম পার্বত্য অঞ্চলে পারস্পরিক আস্থা, সম্প্রীতি ও সহাবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।






